ক্লাসে না গিয়েও নিয়মিত বেতন ভাতা তুলেছেন শিক্ষক!

বরগুনার তালতলী উপজেলার কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ঝাড়াখালী সালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মানসুরুল আলমের বিরুদ্ধে ক্লাসে না গিয়েও নিয়মিত সরকারি বেতন ভাতা তোলার অভিযোগ উঠেছে।
ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, শিক্ষক মানসুরুল আলম চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মাদ্রাসায় কোনো ক্লাস নেননি। অথচ ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আ. জব্বার শিক্ষক হাজিরা খাতা গোপনে মানসুরুল আলমের বাড়িতে পাঠিয়ে স্বাক্ষর নিচ্ছেন তার। এভাবে তিনি বাড়িতে বসেই স্বাক্ষর করে মাসিক ২০ হাজার টাকা হিসেবে এক বছরে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন।
এ বিষয়টি জানতে সরেজমিনে মাদ্রাসায় গেলে সত্যতা মেলে। সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষক হাজিরা খাতায় মানসুরুল আলমের সম্পূর্ণ হাজিরা খালি রয়েছে।
এ ছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ জুন কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণ হয়। নির্বাচনে তিনি ওই ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা আরও জানান, নিবার্চন চলাকালীন সময়ে মাদ্রাসা থেকে তিনি ছুটি না নিয়ে নিবার্চন করেছেন। মে ও জুন মাসে নির্বাচনী প্রচারে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকে জুলাই মাসে মেডিকেল সার্টিফিকেট দাখিল করে বেতন ভাতা তুলেন। এ ছাড়াও সেপ্টম্বর মাসে হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর না থাকলেও তিনি কলাপাড়ার একটি বেসরকারী ক্লিনিক থেকে হাতে লেখা একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট এনে বিল করিয়ে বেতন নেন। চলতি মাসেও তিনি অনুপস্থিত রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, মানসুরুল আলম চলতি বছরের কোনো মাসে মাদ্রাসায় আসেননি। তিনি ভারপ্রাপ্ত সুপারের সঙ্গে গোপন সখ্যতা তৈরি করে বাড়িতে হাজিরা খাতা পাঠিয়ে স্বাক্ষর আনা হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষক মানসুরুল আলমের কাছে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, নিউজ কইরেন না। আমি অসুস্থ। অপরদিকে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা আ. জব্বার বলেন, মেডিকেল ফিটনেসের ভিত্তিতে তাকে বেতন ভাতা দিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লুৎফুল কবির মো. কামরুজ্জামান জানান, মেডিকেল ফিটনেস দিতে হলে সিভিল সার্জনকে মেডিকেল ফিটনেস দিতে হবে।
এ ব্যাপারে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম সাদিক তানভীর বলেন, যদি কোনো শিক্ষক অনুপস্থিত থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করেন তাহলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএইচ
