শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু আজ
নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল ছিঁড়ে এবার উৎসবের পুরোনো রঙে ফিরেছে শারদীয় দুর্গাপূজা। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে কোনো উৎসবেই প্রাণ ছিল না। শুধু আচার-আনুষ্ঠাকিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। দুর্গাপূজায়ও ছিল নানা নিষেধাজ্ঞা। ছিল বাড়তি সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়গুলোও। তবে এবার করোনার সংকট ও ভয় কাটিয়ে ফিরে এসেছে চিরচেনা সেই উৎসবের আমেজ।
এ বছরের দুর্গাপূজার নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, আজ শনিবার মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজা। দশভুজা দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু পূজার আনুষ্ঠানিকতা। সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা। সায়ংকালে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু মূল দুর্গোৎসব। সকাল থেকে চণ্ডীপাঠে মুখরিত মণ্ডপ এলাকা।
আগামীকাল রবিবার মহাসপ্তমী, ৩ অক্টোবর মহাষ্টমী ও কুমারীপূজা, ৪ অক্টোবর মহানবমী শেষে এবং ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের দুর্গোৎসব।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পঞ্চমীর সন্ধ্যায় বোধনের মধ্য দিয়ে দেবীর আগমনের ধ্বনি শোনা গেছে। সারাদেশের পূজা মণ্ডপগুলোতে অনুষ্ঠিত হয়েছে দেবীর বোধন। বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার বন্দনা করা হয়। মণ্ডপে-মন্দিরে পঞ্চমীতে সায়ংকালে তথা সন্ধ্যায় এই বন্দনা অনুষ্ঠিত হয়।
দুর্গোৎসব উপলক্ষে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটিসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারাও।
শাস্ত্র মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যলোকে আসবেন। সেই হিসেবে বসুমতি শস্যে পরিপূর্ণ হয়ে উঠার কথা। দেবী বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে, যার ফল সমৃদ্ধি। এ প্রেক্ষাপটে এবারের দুর্গোৎসব শুভফলই বয়ে আনবে বাঙালির জীবনে।
তবে এবার পূজায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে বৃহস্পতিবার এক কর্মসূচিতে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, 'এবার দুর্গাপূজা ঘিরে জঙ্গি হামলার শঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।'
তাই এবারের দুর্গাপূজা ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পূজামণ্ডপগুলোতে পুলিশ, আনসার, র্যাব ও বিজিবি সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি প্রতিটি মণ্ডপে থাকবে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। নিরাপত্তার বাড়তি প্রস্তুতি হিসেবে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি আর্চওয়ে গেট, মেটাল ডিটেক্টরসহ অন্য আয়োজনও থাকবে।
এসএন