শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি পাওয়ার মূল বিষয় না দেখে শুধুই কি দিবস পালন!
দেশে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি পাওয়ার মূল বিষয় না দেখা শুধুই কি প্রতি বছর দিবস পালনই হবে! আজ শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় পরিপূর্ণ না করে শুধু পহেলা মে ছুটি ও ঘটাও করে অনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই থাকলে হবে না। এর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণে সুপরিকল্পিত নীতিমালা প্রণয়ন করা অতি জরুরী।
আজও তপ্ত রোদে শ্রমিক রক্ত পানি করে, যাদের শ্রমে ঘামে গড়ে ওঠে নগর, সভ্যতা অতঃপর প্রতিষ্ঠিত হয় মানুষের বেঁচে থাকার আশ্রয় ও জীবন। কিন্তু সেই শ্রমিকদের শ্রমের ন্যায্য মজুরি দিতে সঠিক মেলা ভার। অধিকার অদায় বলা শুধু মুখে মুখে অথবা লেখালেখি শ্লোগানে থেকে যায়। আজও একই শ্রম-মজুরির বেলায় লিঙ্গভেদ আর বৈষম্য। শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির দাবি এখনও উপেক্ষিত, আজও তাদের বিরাট অংশ মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত।
পহেলা মে; মহান মে দিবস পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমিক শ্রেণির আন্তর্জাতিকভাবে সংহতি ও ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার প্রকাশের দিন বলে প্রকাশ। তাই এ দিনটিকে তখন থেকে সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য এ বছর মে দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’। দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচির পাশাপাশি বাংলাদেশেও আজ সরকারি ছুটি পালন করা হচ্ছে। দেশের শ্রমজীবী মানুষ এ দিবসে এখনও তাদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন করে আসছে। আমাদের দেশের শ্রমিক-কর্মচারীরা এখনো তাদের শ্রমের ন্যায্য মজুরি ও ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত। নারী-পুরুষ- নির্বিশেষে সমকাজে সমমজুরি থেকে তারা অনেকটা বঞ্চিত। দেশের শ্রমজীবী মানুষের রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই তাদের যথাযথ মর্যাদা অতঃপর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে অনেকেই মনে করেন।
উল্লেখ্য, ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকেরা আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ওই দিন অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে গিয়ে কয়েকজন শ্রমিককে জীবন দিতে হয়। এরপর থেকে দিনটি ‘মে দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। মে দিবস প্রতিষ্ঠার ১৩৬ বছরেরও বেশি সময় পরে শ্রম মজুরি, কর্মঘণ্টা ও শোভন কর্মের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
লেখকঃ- নূর মোহাম্মদ রবিউল, কবি ও সাংবাদিক, এস.সি.বি.রোড, আমলাপাড়া, কুষ্টিয়া-৭০০০।
ডিএসএস/