‘আগুন হাতে নিয়ে আসবেন না, ওই হাত গুঁড়িয়ে দেব’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এত লাফালাফি কেন? লম্ফঝম্ফ করে কোনো লাভ নেই। যে হাতে আগুন নিয়েছেন, ওই হাত পুড়িয়ে দেব। যে হাত ভাঙচুর করবে, ওই হাতও ভেঙে দেব। আগুন হাতে নিয়ে আসবেন না, ওই হাত গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।’
বুধবার (১৭ মে) বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৩তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কাউকে আক্রমণ করব না। কিন্তু আক্রান্ত হলে কাউকে ছাড়ব না। নির্বাচনে আসবেন কি আসবেন না, সেটা আপনাদের ব্যাপার। কিন্তু নির্বাচন হতে দেবেন না, এত শক্তি কোথায় পেলেন?’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে নালিশ করতে নয়, দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ করতে যান। বিদেশ সফর শেষে তিনি খালি হাতে ফেরেন না।
তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক মানুষের জন্য শেখ হাসিনা প্রথম ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর উদ্যোগ নেন। কিন্তু বিএনপি তা বন্ধ করে দিয়েছিল। জাতিসংঘ আজ তার স্বীকৃতি দিয়েছে। বিদেশ সফর থেকে শেখ হাসিনা খালি হাতে আসেননি।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বাংলাদেশের একটি মহল শত্রুতা করে শেখ হাসিনার ভালো কাজেরও নিন্দা করেন। ভালো কাজের বিরোধিতা ও সমালোচনা করতে থাকেন। একটা ধন্যবাদ জানানোর মতো মন এদের নেই। বিএনপি নেতাদের মন ছোট। বাংলাদেশের বড় অর্জনের প্রশংসা করতে এরা জানে না। এরা ছোট মনের মানুষ। বাংলাদেশে গত ৪৮ বছরের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম শেখ হাসিনা।
সংসদ উপনেতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে কেবল বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেননি। এ দেশকে তার পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করেছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মতলববাজরা আবার নতুন মতলববাজি শুরু করেছে। তাদের চিহ্নিত করতে হবে। ড. ইউনূস নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। দুর্নীতিবাজ ড. ইউনূস দেশকে বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছিল। ড. ইউনূসসহ সাম্রজ্যবাদী শক্তিকে ঠেকাতে হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে পদার্পণের পর দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাই ১৯৮১ সালের ১৭ মে শুধু ব্যক্তি শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নয়, গণতন্ত্রের অগ্নিবীণার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ফিরে আসার পর তার হাত ধরে গত ৪২ বছরে বাঙালির জীবনে, বাংলাদেশের মানুষের জীবনে, বাংলাদেশের ললাটে অনেক নতুন তিলক উঠেছে। বাংলাদেশ অনেক অর্জন করেছে।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দিতে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যতদিন জনগণ পক্ষে আছে, ততদিন কোনো অপশক্তি আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে পারবে না।
সভাপতির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই আমরা গণতন্ত্র পেয়েছি, ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছি। তার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাবে। আজকের দিনে শপথ নিতে হবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমন্ডলির সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ।
এনএইচবি/এমএমএ/