মে দিবসে শ্রমিক সমাবেশে বড় শোডাউনের প্রস্ততি বিএনপির
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে গতি ফেরাতে চায় বিএনপি। রমজান এবং ঈদের ছুটির পর বড় কোনো প্রথম কর্মসূচি নিয়ে পহেলা মে আবারও মাঠে নামছে দলটি।
বড় শোডাউনের মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত ধারাবাহিক আন্দোলনের পথে হাঁটছেন দলের দায়িত্বশীল নেতারা। বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
তারা বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনে জন্য হাতে গনা কয়েক মাস বাকি। ফলে এখন আর তারা পেছনে ফিরে তাকাতে চায় না। ‘ডু অর ডাই’ অবস্থায় যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে চাপে রেখে দাবি আদায় করতে চায় বিএনপি নেতারা।
শ্রমিক সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে বলেও জানা গেছে। তবে কি ধরনের কর্মসূচি আসবে তা জানা যায়নি।
আগামী ১ মে নয়াপল্টনে বিএপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শোভাযাত্রা ও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া, সারাদেশে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে একই কর্মসূচি পালিত হবে বলেও জানান তিনি।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকায় আমরা তিনটার মধ্যে সমাবেশ করব, তারপরে শোভাযাত্রা করব বাংলামোটর পর্যন্ত চাইব দেখি কতদূর দেয়।’
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার অত্যাবশক পরিষেবা আইন করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করছে, শ্রমিকদেরও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। এর মাধ্যমে দ্রুত সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। শ্রমিক দিবসে এসব কালা কানুন বাতিলের দাবি জানানো হবে বলে জানান তিনি।
বিএনপির চলমান যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ১ মে ঘোষণা করা হবে কি না এমন প্রশ্ন জবাবে নজরুল বলেন, শ্রমিকদের সমাবেশ থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা হওয়ার কথা না। তবে সেখানে যেহেতু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা থাকবেন যদি কিছু বলে ফেলেন, বলা যায় না।
কর্মসূচি সফল করতে বিএনপির শীর্ষনেতারা দফায় দফায় মতবিনিময় করছেন। বিএনপিরসহ অঙ্গদলগুলোর পৃথক পৃথক পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।
গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে শ্রমিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বিএনপি মহাসচিব প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
চলমান আন্দোলনে শ্রমজীবী মানুষকে অধিকতর সম্পৃক্ত করার উপর গুরুত্বারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্র ও সুশাসন ছাড়া এদেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই তারা শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে সচেষ্ট নয়।’
তিনি বর্তমান সরকারকে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থবিরোধী ও ম্যান্ডেটবিহীন উল্লেখ করে এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করে বলেন, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি।তিনি মনে করেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে আসন্ন মে দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ ছাড়া, বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে (ভাসানী মিলনায়তনে) প্রস্ততি সভা করে নগরের দক্ষিণ কমিটি। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
এ সময় মির্জা আব্বাস বলেন, কোনো দেন দরবার নয়, কোনো আলোচনা নয়। এই অবৈধ ও নিশিরাতের ভোটের সরকারকে অপসারণ করতে হবে, পদত্যাগ করতেই হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাতিতে আমাদের কর্মসূচি চলমান আছে।
তিনি বলেন, ‘পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে আমরা কর্মসূচির ধরন পরিবর্তন করব। সময়ের প্রয়োজনে যে ধরনের কর্মসূচি দেওয়া লাগে আলোচনা করে তাই করা হবে।’
এমএইচ/এমএমএ/