বিএনপি সন্ত্রাসীদের ঢাকায় এনে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়: নাছিম
বিএনপি সমাবেশের নামে সারাদেশ থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী ঢাকায় এনে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি হাজারীবাগে সমাবেশের নামে জাতীয় পতাকায় লাঠি বেঁধে এনে নিরপরাধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের উপর হামলা চালিয়েছে। এরা চায় সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে। আমরা এদের আর দেশে কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে দেব না। এরা দেশকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য তৈরি করতে চায়।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পাশে ১০ নং ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, টুঙ্গিপাড়া এক অজপাড়াগাঁয়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার কোল আলো করে জন্মগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানেই তিনি মাটি ও মানুষের সঙ্গে নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে বেড়ে উঠেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে বঙ্গমাতার
সঙ্গে পারিবারিক-ভাবে ঢাকায় আসেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা অত্যন্ত সাদামাটা পরিবেশেই সুখ আনন্দ বেদনার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেন। ত্যাগের মহিমা ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে তিনি বড় হয়েছেন। আমরা ভাগ্যবান এমন একজন মানুষের জন্ম হয়েছে এ দেশে। তিনি তার জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময়টাই দেশের মানুষের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি তার সারাজীবন দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে কাটিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট খুনি জিয়া মোস্তাক গংরা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতে। পরর্বতীকালে জিয়া ইনডেমনিটি আইন করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষা করে। তাদের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরি দেয়। জিয়া সেনা ছাউনিতে বসে গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় বিএনপি নামক দল গঠন করে।
পরবর্তী সময়ে খালেদা জিয়া তার স্বামীর মত জাতির পিতার হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছিলেন। তাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছিল। রাজনীতিতে এনে সংসদে বসার সুযোগ দিয়েছিল। তার লক্ষ্য ছিল জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশকে বিতর্কিত করা। আমাদের বাঙালির জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করা। তারা চেয়েছিল জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের মূলনীতিকে উপড়ে ফেলতে।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি-জামাত সবসময় দেশে ও দেশের বাইরে বসে জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। তারা সবসময় চায় বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে। বাঙালি জাতির জাতিসত্তাকে বিনষ্ট করে পাকিস্তানিদের সব সময় খুশি করতে চায় এরা।
এদের এ সকল ষড়যন্ত্র সফল হলে বাংলাদেশে হবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো রাষ্ট্র। এরা নারীদের ক্ষমতায়ন চায়না। নারীদের জাগরণ দেখলে মেনে নিতে পারে না।মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ আত্মনির্ভরশীল হোক বিএনপি জামাত তা কখনো চায় না। এরা চায় বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে যাক, বাংলাদেশের কোনো অস্তিত্ব না থাকুক, দেশে সব সময় জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হোক। দেশে সাম্প্রতিক ষড়যন্ত্র করে এরা দাঙ্গা লাগিয়ে শান্তি বিনষ্ট করতে চায়।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এরা এখন শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যার বিরোধিতা করে না তারা তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। তারা যেকোনো উপায়ে যেকোনো মূল্যে ক্ষমতায় আসতে চায়। এর জন্য তারা দেশে ও আন্তর্জাতিক ভাবে নানা ষড়যন্ত্র করছে। এরা বিদেশিদের কাছে গিয়ে নালিশ করে। তারা মিথ্যাচার ও গুজব রটিয়ে দেশ অস্থিতিশীল করতে চায়। এরাই দেশে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছিল। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, শুধু গণতন্ত্রের লেবাস ধরে থাকে। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নে বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। আজ বিশ্বে বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে রয়েছে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ সম্মানিত রাষ্ট্র। বড় বড় রাষ্ট্র প্রধানের কাছে শেষ হাসিনা এক অনন্য উদাহরণ।
নাছিম বলেন, বিএনপি নেতারা কিছুদিন যাবত তাদের সমাবেশে আমাদের হুমকি দিচ্ছি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনো চায়না বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসুক কারণ তারা জানে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নাকি মারা যাবে।
মির্জা ফখরুল সাহেব আপনি কি বলতে চাচ্ছেন আপনারা ক্ষমতায় গেলে আমাদের হত্যা করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে হত্যা করে রক্তের গঙ্গা বইয়ে দিবেন। আমি বলতে চাই,আমাদের হত্যা করা যায় কিন্তু আমাদের আদর্শ থেকে সরানো যায় না। আপনারা আমাদের পথে বাধা সৃষ্টি করে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া রুখতে পারবেন না। বীরের রক্ত আমাদের শরীরে। আমাদের হত্যার ভয় দেখিয়ে থামানো যাবেনা।
তিনি বলেন, বিএনপি জামাতের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা আর দেশে এদের খুন, ষড়যন্ত্র, অগ্নি সন্ত্রাস ও হত্যার রাজনীতি করতে দেব না। এরা যদি আমাদের দেশের জনগণ ও দেশের কোনো সম্পদে আঘাত করে তাহলে আমরা তাদের প্রতিঘাত করবো। এরা এখন স্লোগান দেয় ৭৫ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। তাই এদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিটা নেতা কর্মীকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে কেউ বাধা দিলে আমরা তাদের ছেড়ে দিবো না। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের সঙ্গে আছেন। দেশের উপর আর কোন আঘাত আসে তাহলে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এদের প্রতিহত করব।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।
এসএম/এমএমএ/