ইভেএমে জনগণের আস্থা নাই: বাংলাদেশ ন্যাপ
নির্বাচন কমিশন যত সংলাপই করুক না কেন তাদের মনে রাখতে হবে ভোট গ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)র উপর জনগণের কোনো আস্থা নাই। নির্বাচন কমিশনের সংলাপ সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাপ।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের অনুষ্ঠিত সংলাপে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানির পক্ষে দলীয় নেতৃরা এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ ন্যাপ'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার মশিউর রহমান গানি'র নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা।
দলের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ইভিএম-এ ভোট হবে এটি এখনো গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নয়। বরং দেশের পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থাটাই ভেঙে গেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর জনগনের আস্থা ফিরিয়ে আনাই নির্বচন কমিশনের প্রধান লক্ষ হওয়া উচিত। অনেক দেশ ইভিএম থেকে সরে এসেছে। বাংলাদেশের মতো দেশে কাগজের ব্যালটে প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করাই সর্বোত্তম এবং নির্বাচন কমিশনকে নতুন বিতর্কে না জড়ানো সমীচীন হবে বলে আমরা মনে করি।
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে, সুষ্ট নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইচ্ছুক এমন একটি স্বায়ত্ত শাসিত সংস্থা হিসেবে নিজেদের পুননিমার্ণের দিকে মনোনিবেশ করা। ইভিএম নিয়ে ফের বিতর্কের ক্ষেত্র সৃষ্টি না করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচন নিয়ে যে সন্দেহ কিংবা আস্থাহীনতা রয়েছে, তা দূর করা।
মোস্তফা ভূইয়া বলেন, ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও সন্দেহ ও অবিশ্বাস আছে। একটি অবাধ, সুষ্ট অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনের পথে এই পদ্ধতিটিই বাধা হয়ে উঠবে। দেশের জনগন মনে করে ইভিএম ‘স্বয়ংক্রিয় ভাবে ভোট চুরির বিশ্বস্ত যন্ত্র’। প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে এটা করা সম্ভব বলেই জনগন মনে করে। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ইভিএম নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা কোন ভাবেই সঠিক হবে না।
তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের জন্যে একটি অবাধ, সুষ্ট, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন অনিবার্য। ভোটের মাধ্যমে নিজের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারা প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার এবং সংবিধান এই মৌলিক অধিকার প্রয়োগের দায়িত্বটি নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছে। কিন্তু, দু:খজনক হলেও সত্য যে, আজ অব্দি কোনো নির্বাচন কমিশনকেই এই কাজে সফল হতে পেরেছে বলে দেশবাসী মনে করে না।
তিনি বলেন, আস্থা পুনরুদ্ধারে নতুন নির্বাচন কমিশন দৃষ্টান্ত দাঁড় করাতে না পারে, তাহলে যে পদ্ধতিতেই নির্বাচন হোক না কেন; এর গ্রহণ যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন-বিতর্ক নিরসন করা যাবে না। গণতন্ত্রের স্বার্থে, সুস্থ ধারার রাজনীতির প্রয়োজনে সর্বাগ্রে স্বচ্ছ, প্রশ্নমুক্ত, গ্রহণ যোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেই হবে। নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য আগে সব রাজনৈতিক দল ও ভোটারের আস্থা অর্জনে যাবতীয় বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করা।
এমএইচ/এমএমএ/