ইভিএম পদ্ধতিতে ঘোষিত ফলাফলকে পুন:পরীক্ষা সুযোগ নেই: মান্না
নাগরিক ঐক্য সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ভোট সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশন একটি ফলাফল ঘোষণা করেছে। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী পরাজিত প্রার্থী ফলাফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ১০৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১০১টি কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে উক্ত প্রার্থী এগিয়ে ছিলেন, শেষ চারটি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শেষে একসঙ্গে উক্ত চার কেন্দ্রের ফলাফল এমনভাবে ঘোষিত হয় যে ১০১ টি কেন্দ্রে অগ্রগামী প্রার্থী বাকি মাত্র চারটি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা শেষে পরাজিত ঘোষিত হন।
তিনি বলেন, ‘এরকম ঘটনা নিঃসন্দেহে প্রশ্নের জন্ম দেয়। দুভার্গ্যজনক বিষয় এই যে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক যে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে, তাতে ঘোষিত ফলাফলকে পুনঃপরীক্ষা করার বা চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই।’
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) এক বিবৃতিতে মাহমুদুর রহমান মান্না এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ইভিএমের সঙ্গে পেপার ট্রেইল অর্থাৎ স্বয়ংক্রিয় প্রিন্টেড ব্যালটের ব্যবস্থা না রাখায় ঘোষিত ফলাফলে সরকারের আজ্ঞাবহ ব্যক্তিদের দ্বারা জালিয়াতি হয়েছে কিনা সেটা পরীক্ষা বা চ্যালেঞ্জ করার ব্যবস্থাই বিদ্যমান নাই।’
মান্না বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই দেখেছি কুমিল্লার নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন তার নিজের নির্দেশকে বাস্তবায়ন করার শক্তি বা সদিচ্ছা দেখাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এমতাবস্থায় বর্তমান নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটের আয়োজন করে তাদের ঘোষিত ফলাফলের উপর জনগণের ভাগ্য ছেড়ে দেওয়া যায় না।
উপরন্তু কুমিল্লার নির্বাচনে বহু নাগরিক আঙ্গুলের ছাপ না মেলার কারণে ভোট দিতে পারেন নাই। জাতীয় পত্রিকায় এমন খবরও এসেছে যে একটি কেন্দ্রের ইভিএম মেশিনে নৌকা ছাড়া আর কোনও মার্কা ছিল না, যেটার অভিযোগ পেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পরিদর্শনে গেলেও তাকে পরিদর্শন করতে দেয়নি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বর্তমান ক্ষমতাসীন অবৈধ ভোট ডাকাত সরকারের অধীনে ব্যালট কিংবা ইভিএম কোনো পদ্ধতিতেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এই সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন ভোটের উপর জনগণের আস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করেছে। ২০১৮ সালের মধ্যরাতের ভোট ডাকাতি নির্বাচন ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। দেশের হারানো গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য দখলদার অবৈধ আওয়ামী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যে সরকার একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি করবে এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। অন্যথায় বর্তমান স্বৈরাচার সরকার দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে একটি একনায়কতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে।
এমএইচ/এমএমএ/