গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের বিকল্প নেই: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কুমিল্লার নির্বাচনে কী হয়েছে আপনারা নিজেরাই দেখেছেন। আমরা বহু আগে থেকেই বলেছি কী হবে। এজন্য আমরা কোনো নির্বাচনে যাচ্ছি না। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানেই হচ্ছে তাদের বৈধতা দেওয়া। আমি মনে করি আমাদের বিচার বিভাগ, প্রশাসন, শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সবকিছু যদি আমরা রক্ষা করতে চাই তাহলে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশে এই আলোচনা সভা আয়োজিত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৬ জুন শুধুমাত্র সাংবাদিক বা সংবাদ জগতের জন্য কালো দিন নয়, সমগ্র জাতির জন্য একটা কালো দিন। এদিন সকল সংবাদপত্রকে নিষিদ্ধ করে শুধুমাত্র চারটি সংবাদপত্র চালু রাখা হয়েছিল এবং তা সরকারি তত্ত্বাবধানে চলবে এই সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় আমাদের লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠা করার। কিন্তু রাষ্ট্রের চরিত্রকে তখন থেকেই নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল, যে এটা আওয়ামী লীগের একদলীয় রাষ্ট্র। সেদিন যারা প্রতিবাদ করেছেন তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা গত এক যুগ ধরে দেখছি, ধীরে ধীরে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে যখন বাদ দেওয়া হয় তখন থেকেই আমরা এই চিন্তা করেছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংবাদমাধ্যম ও রাষ্ট্রের স্বাধীনতাকে আমি ভিন্ন করে দেখি না। এটি একটি অপরটির পরিপূরক। গণতন্ত্রকে না পেলে আমরা স্বাধীনতা পেতে পারি না। আমাদের মূল লক্ষ্য এখন গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা। যারা বাকশাল করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিলেন তাদের কাছ থেকে আমরা গণতন্ত্র পেতে পারি না। আওয়ামী লীগের বডি ক্যামিস্ট্রিই প্রমাণ করে তাদের জোর করে সবকিছু আদায় করে নেওয়ার প্রবণতা।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের তফাত হচ্ছে তারা গণতন্ত্রকে হরণ করেছে, মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে হরণ করেছে। বিএনপি সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার মাধ্যমে। আজকে যারা ব্যবসায়ী আছেন তারা সংবাদপত্রকে নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের থেকে তো আমরা গণতন্ত্র আন্দোলন করার ব্যাপারটা পাবো না। আজকে অনেকেই বলেছেন সেখানে ব্যক্তি সাংবাদিকদের ভূমিকা অবশ্যই থাকবে। সেটা কতটুকু সম্ভব আমি তাও জানি না। সেই লক্ষ্যে আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য সব পেশা ও শ্রেণির মানুষকে আমাদের জাগিয়ে তুলতে হবে। যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তার চূড়ান্ত রূপ দিতে হবে। এ আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই আমরা দেশের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনব।
বিএফইউজে'র সভাপতি এম আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজে সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজে সহসভাপতি বাসিত জামান, ডিইউজে সহসভাপতি রাশেদুল, ডিইউজে সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের যুগ্ম সম্পাদক লাবিন রহমান, বিএফিউজে যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজু,ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন, বিএফইউজে সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম প্রমুখ।
এমএইচ/এসজি/