জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে খালেদা জিয়া, উল্লাস করছে শেখ হাসিনা: রিজভী
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে খালেদা জিয়া অথচ শেখ হাসিনা উল্লাস করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জীবন বিপন্ন। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অথচ শেখ হাসিনা উল্লাস করছে। শেখ হাসিনার উল্লাস অদিম-অরণ্যের উল্লাস। আদিমকালে শিকারকে আঘাত করে, তাকে কব্জায় নেওয়ার পর শিকারি যেভাবে উল্লাস করত সেই আদিম উল্লাস করছেন শেখ হাসিনা। গোটা জাতিকে বন্দী করে, গোটা জাতির বাক স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকারকে বন্দী করে, শেখ হাসিনা এখন উল্লাস করছেন পদ্মা সেতু দেখিয়ে।
রবিবার (১২ জুন) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যায়লে এক দোয়া মাহফিলের তিনি এ সব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, বিদেশে উন্নত সুচিকিৎসা ও সুস্থতা কামনায় এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, নেত্রী জটিল সমস্যায় ভুগছেন। লিভারের জটিল সমস্যা, কারাগারে নেওয়ার আগে চোখে অপারেশন হয়েছিল। সেই জরাজীর্ণ কারাগার, পুরোনো বিল্ডিংয়ের ধুলোবালি তার অপারেশন করা চোখে পড়েছে। এটাও একটা নির্যাতন। তারপর করোনা আসলো, সেই করোনার মধ্যেই তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। তারপর ভুগলেন ভয়াবহ করোনায়। এর মধ্যে গতকাল আমরা জানলাম তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তাহলে বুঝুন কী শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে তিনি পড়েছেন। আমি গতকাল দেখতে গিয়েছিলাম, দূর থেকে দেখেছি। চেনা যায় না।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, পরিস্থিতি যখন এই, তখন কী বার্তা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী? পদ্মা সেতু নিয়ে কত আয়োজন করা হবে। কত জৌলুশ করা হবে। সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জেলায় জেলায় উৎসব করা হবে। কারণ তার মনের মধ্যে আনন্দ। একনায়ক শাসকের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী যদি খুব খারাপ অবস্থায় থাকে, জীবন যন্ত্রণার শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে থাকে তখন এটা তাদের জন্য আনন্দের হয়। শেখ হাসিনা সেই আনন্দই করছেন।
পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, মনে হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জন্য যে সেতুটি, সেটি একবারে নিজের পৈত্রিক টাকা থেকে তিনি বানিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু একবারও তিনি বললেন না যে এটা অল্প টাকায় বানানো যেত। বিশ্ব ব্যাংক যে উদ্যোগ নিয়েছিল সেখানে তার মন্ত্রী, তার উপদেষ্টারা ঘুষ চাওয়াতে বিশ্ব ব্যাংক সেটা বাতিল করেছে। বিশ্ব ব্যাংক সবচেয়ে অল্প সুদে প্রকল্পে অর্থায়ন করে। এখন চীনের কাছ থেকে চড়া সুদ নিয়ে পদ্মা সেতু তিনি করেছেন। এই চড়া সুদের কারণে প্রায় ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নবজাতক শিশু তার মায়ের পেট থেকে জন্ম নিচ্ছে। এটা শেখ হাসিনার অবদান। গোটা জাতিকে, নবজাতক শিশুকে তিনি ঋণগ্রস্ত করেছেন।
সাবেক ছাত্রদল এ নেতা বলেন, সারাসদেশের মানুষ এখন ঋণগ্রস্ত। মধ্য ও নিন্ম আয়ের মানুষরা আগে যে টাকায় পণ্য কিনতে পারতেন এখন তা পারবেন না। সাধারণ মানুষ চোখে অন্ধকার দেখছে। বৈশাখের ঝাড়ের আগে যে ঘন অন্ধকার হয়, মানুষের চোখে চোখে সেই অন্ধকার দেখছে। শেখ হাসিনা বুঝতে পারছেন না গোটা জাতির সঙ্গে, মধ্য আয়ের মানুষের সঙ্গে, নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গে, তাদের ক্ষুধা নিয়ে তামাশা করছে। তাদের দারিদ্র্যতা নিয়ে রসিকতা করছে। তিনি তাদেরকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করছে।
সংগঠনের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সরোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচ/