আবারও নির্বাচন চায় বাম জোট
ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আবারও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
নেতারা বলেছেন, চলমান রাজনৈতিক সংকট দূর করতে একদলীয়, অগ্রহণযোগ্য ও জনসমর্থনহীন প্রহসনের নির্বাচনে ঘোষিত সংসদ ভেঙে দিতে হবে। অবিলম্বে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি প্রবর্তনসহ নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সাত্তার, বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
লিখিত বক্তব্যে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকার একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করে দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা আরও পাকাপোক্ত করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। গণতন্ত্রহীনতায় নির্বাচনব্যবস্থা আজ ভঙ্গুর। সুষ্ঠু নির্বাচন নির্বাসনে চলে গেছে। বর্তমান ও অতীতের ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতি, রাজনীতিকে ব্যবসায় পরিণত করা এবং মুক্তবাজারের লুটপাটের অর্থনীতির ধারায় চলমান বাজারি রাজনীতি সংকট আরো গভীর করে তুলেছে।
তিনি বলেন, দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রক্ষায় এই সরকার হটিয়ে এবং শোষণমূলক পুঁজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন করেই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার ও সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শাসক বুর্জোয়াশ্রেণির উভয় রাজনৈতিক বলয়ের গণবিরোধী ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতি থেকে গণতন্ত্র ও রাজনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। এই লক্ষ্যে সকল নীতিনিষ্ঠ বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, সিন্ডিকেট ভাঙ্গা, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বিকল্প বাজারব্যবস্থা চালু এবং গ্রাম-শহরে রেশনিং ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যে দোকান চালুর দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে দেশের রাজনৈতিক সংকটে বিরাজনীতিকরণের অশুভ তৎপরতা সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শ্রমিকদের জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণসহ জনজীবনের সংকট দূর, সম্পদ লুটপাটকারীদের শাস্তি, সবধরনের নিপীড়ন বন্ধ, গ্রেপ্তারকৃত সব রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি এবং কালো আইন বাতিলেরও দাবি জানানো হয়।
এসব দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের মাসব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচিতে রয়েছে, আগামী ২৭ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ২৮ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী সভা-সমাবেশ, মতবিনিময় সভা, দুদক ও এনবিআরের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ।