আজ বিএনপির কর্মসূচিতে 'পাহারায়' আওয়ামী লীগ
সারাদেশে সব মহানগর ও জেলা সদরে অবস্থান কর্মসূচির পর এবার মহানগরীর সব থানা এবং সব উপজেলায় দুই ঘণ্টা যুগপৎ অবস্থান কর্মসূচি করবে বিএনপি।
বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ১০ দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
শনিবার (৮ এপ্রিল) বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে। এ ছাড়া ১০ এপ্রিল থেকে লাগাতার এক সপ্তাহের কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
এদিকে বিএনপির আজকের অবস্থান কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগ 'শান্তি সমাবেশ' করবে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ৩০০ স্থানে এ সমাবেশ করবে দলটি।
গত বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর আজিমপুর কলোনি মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, যদি তারা রাস্তা বন্ধ করে অবরোধ করে, মানুষকে কষ্ট দেয়, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে উসকানি, সন্ত্রাস করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় আমরা ওই ৩০০ জায়গায় শান্তিপূর্ণ শান্তি সমাবেশ করব।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটসহ ১৩টি মহানগরীর ১২৮টি থানায় এবং সাড়ে ৫০০ উপজেলা মিলে প্রায় সাড়ে ৬০০ স্থানে একযোগে এই অবস্থান কর্মসূচি হবে। এই কর্মসূচিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, দলের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতারা অংশ নেবেন। ইতোমধ্যে নেতাদের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়ে একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত ১ সপ্তাহ সব বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন ও প্রচারপত্র বিলি কর্মসূচি হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচি হবে বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত। এই কর্মসূচি সমন্বয়ের জন্য বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা ও পৌরসভা ইউনিটকে ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচি সফল করতে প্রস্তুতি সভা, কর্মীসভা, গণসংযোগ জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। পৌর ইউনিটের নেতা-কর্মীদের উপজেলার কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকা প্রকাশ-কে বলেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।
তিনি বলেন, সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করে একের পর এক বেআইনি কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে একের পর এক বিএনপির মাহফিলে ইফতার করার সময় পুলিশ হামলা চালাচ্ছে। গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কুমিল্লা, নরসিংদী, নাটোর, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলার নাম উল্লেখ করেন তিনি।
আজকের কর্মসূচি জোটগত না হলেও সমমনাদের কেউ কেউ এ কর্মসূচি পালন করবে। অন্যদলগুলো প্রচার পত্র বিলি কর্মসূচি পালন করবে বলে জানিয়েছে।
জানতে চাইলে ১২ দলীয় জোট শরিক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা ঢাকা প্রকাশ-কে বলেন, অবস্থান কর্মসূচি হচ্ছে মূলত বিএনপির কর্মসূচি, তারা সারা দেশে ৬৫০টি স্থানে এ কর্মসূচি পালন করবে।
তিনি বলেন, শুক্রবার আমাদের লিয়াজোঁ কমিটির মিটিং ছিল। আমরা প্রচারপত্র বিলি কর্মসূচিটা পালন করব। ২/১ দিনের মধ্যে তারিখটা জানিয়ে দেব।
এলডিপি
যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ শনিবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর পূর্বপান্থপথস্থ এফডিসিসংলগ্ন এলডিপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।
অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এলডিপির মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমদ। এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা এ সময় উপস্থিত থাকবেন।
সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট
একই দাবিতে শনিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট। জোটের সমন্বয়কারী মুহাম্মদ সাইদুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করবেন।
গণফোরাম
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দ্রুততম সময়ে পুনর্বাসন ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের এবং আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে, গণবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারসহ অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের দাবিতে শনিবার, বিকাল ৪টায় গণফোরাম চত্বরে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি।
এর আগে ১ এপ্রিল রাজধানীসহ সব মহানগর ও জেলা সদরে বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা যুগপৎ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
এসএন