‘রক্তপাত ছাড়া হাসিনার আর কোনো অবলম্বন নেই’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ব্যক্তিকেন্দ্রিক একনায়কতান্ত্রিক শাসনের দুঃসহ পরিণতি এখন গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই দৃশ্যমান। রক্তপাত ছাড়া শেখ হাসিনার আর কোনো অবলম্বন নেই। তার শাসনে গণতন্ত্রের অধঃপতন, ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণ, নির্ভয়ে বসবাসের সুযোগ হরণ নিশ্চিত হয়েছে। এখন নাৎসীবাদের জয়জয়কার বাংলাদেশে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হয়ে আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রের ভিত্তির ওপর ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। বাংলাদেশ এখন দুঃসময় পার করছে। এরা রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রসমাজে বিভেদ-বিভাজনের মাধ্যমে চরম মেরুকরণ করেছে। একনায়কতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। বাকশালী ইতিহাসের নতুন অধ্যায় যুক্ত হচ্ছে। বিচার, প্রশাসন, জাতীয় সংসদ, নির্বাচন কমিশন সবাই মুখোশের আড়ালে বাকশালী চেতনা ধারণ করে আওয়ামী সরকারের পক্ষে নিরন্তর কাজ করে চলছে। তারা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সহনশীলতা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অচেনা করে তুলছে।’
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেিএসব কথা বলেন রুহুল কবির।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখন আতঙ্কের মধ্যে নিমজ্জিত মন্তব্য করে সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, ‘বিরোধী রাজনীতির কর্মসূচিতে সহিংস আক্রমণ কোনো গণতান্ত্রিক রীতির আওতায় পড়ে? যদিও গণতন্ত্রের কথা প্রায়ই ক্ষমতাসীনদের মুখে খৈ ফোটে। আমরা আওয়ামী গণতন্ত্রের আরেকটি নমুনা দেখলাম-গতকাল মুন্সিগঞ্জে পুলিশের সহিংস তাণ্ডবে। পুলিশ এবং পুলিশের ভেতর থেকে খালি গায়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বৃষ্টির মতো গুলি করছিল বিএনপির সমাবেশে, তারা কারা?’
রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংকটের উৎপত্তিস্থল আওয়ামী লীগের শাসনকাল। মিথ্যা অপপ্রচার, লুটপাট, বিরোধী দলের নেতাদের নামে কুৎসা রটনা, বারবার প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ, এক তরফা নির্বাচন, বিরোধী কন্ঠস্বরকে নিষ্ঠুরভাবে দমন, গুমের অভিনব কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো দস্যুবৃত্তি, লক্ষ লক্ষ বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে বানোয়াট মামলা ইত্যাদি আওয়ামী লীগের প্রকৃত উন্নয়নের নমুনা।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ বিরোধী দলকে চাপের মুখে ফেলতে সরকারের প্রকাশ্য ও গোপন অমানবিক কৌশলের বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে। স্বৈরশাসকদের পথে পথে প্রতিরোধ করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে জনগণের এক প্রবল স্রোত। সেই স্রোতে ভাসিয়ে দিতে হবে এই অবৈধ সরকারকে।’
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোকজন বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন ও হুমকি প্রদান করে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। অধিকাংশ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এখন বাড়ি ছাড়া। ইতোমধ্যে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার জন্য উল্টো হামলার শিকার বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
আমি বিএনপির পক্ষ থেকে এই মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা শুনতে পাচ্ছি আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সংগঠন এর নেতা-কর্মীরা মুন্সীগঞ্জ সদর ও শহরে মিছিল বের করবে এবং লোক মুখে শোনা যাচ্ছে সেই মিছিল থেকে জেলা ও সদর বিএনপির কার্যালয়সহ বিএনপির নেতা-কর্মী সমর্থকদের শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ বাড়িতে বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’
এমএইচ/এমএমএ/