বিএনপি ক্ষমতায় এলে জনগণের সরকার হবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত সচেতন ও পরিকল্পিতভাবে রাজনীতি ও বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে। এখন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে। আওয়ামী লীগের চরিত্র হচ্ছে চুরি ও দুর্নীতি করা। তাই উন্নয়নের নামে পরিকল্পিতভাবে দেশের মানুষের সঙ্গে ভাওতাবাজি শুরু করেছে।'
তিনি বলেন, 'এ সরকারের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সড়ক ব্যবস্থায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে রেখেছে। তাই প্রতিদিন শত শত মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। আহত-নিহত হচ্ছেন।'
শনিবার (জুলাই ৩০) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সারাদেশে নজিরবিহীন লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, অনির্বাচিত সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এরা ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই এ সরকারের পতন নিশ্চিত করে বিএনপি যদি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারে তাহলে দেশের চলমান সংকট সমাধান করে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।'
তিনি বলেন, 'আজকে দুর্নীতি করে, চুরি করে তারা (সরকার) বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সর্বনাশ করে দিয়েছে। অথচ এ সরকার বিদ্যুতের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে এবং লুট করে বিদেশে পাঠিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'এখন একটাই দফা, এক দাবি সরকারের পদত্যাগ। পরিষ্কার কথা এ মুহূর্তে পদত্যাগ কর, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর কর। একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এ সংসদকে বাতিল কর এবং নতুন একটা নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে দিয়ে দাও।'
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এ ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী ভয়ঙ্কর দুর্নীতিবাজ সরকারকে একটা ধাক্কা লাগাতে হবে। সেই বিখ্যাত উক্তি- ‘দড়ি ধরে মারে টান, রাজা হবে খান খান’। আসেন সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে চলি, মানুষকে জাগিয়ে তুলি এবং মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এ ভয়াবহ সরকারের পতন ঘটাই।'
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদ্যুত উৎপাদন করে না, বিদ্যুত দেয় না কিন্তু ক্যাপাসিটি ট্যাক্সের টাকা নিয়ে চলে যায়। কারা টাকাগুলো নিয়েছে জানেন?'
তিনি বলেন, ‘সামিট গ্রুপ এক বছরে নিয়েছে ৯ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা, এগ্রিকো ইন্টারন্যাশনাল ৬ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা, এরদা পাওয়ার হোল্ডিং ৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা, ইউনাইটেড গ্রুপ ৪ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা, কেপিসিএল ৩ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এ রকম ১০টা কোম্পানি যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে, মন্ত্রীদের সঙ্গে, হাসিনার সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদ্যুত উৎপাদন না করে টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। কারণ এ আওয়ামী লীগ সরকার, শেখ হাসিনার সরকার-এদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে লুটপাট করা, দুর্নীতি করা।'
এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে সকাল ৯ টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল সহকারে মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত বিক্ষোভ সমাবেশ। বিক্ষোভ সমাবেশ কে কেন্দ্র করে সকাল থেকে পল্টন মোড় থেকে শাহবাগগামী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এসএন