মাঠ কাঁপিয়ে বেড়ানো ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রীরা এখন কোথায়?
ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের জন্য ছিল একটি দু:স্বপ্নের ন্যায়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চাপে পড়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। জনরোষ থেকে বাঁচতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন ভারতে। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা গা ঢাকা দিতে শুরু করেন। বিগত দিনে রাজপথ কাঁপানো ছাত্রলীগ নেতাদের অনেকের খোঁজ মিললেও এখনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না দাপুটে সব ছাত্রলীগ নেত্রীদের। শুধু তাই নয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও নেই আগের মত সক্রিয়।
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তাদের নিয়ে ট্রলিং এবং অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার বিষয় নিয়েও এখন পর্যন্ত মুখতে দেখা যায়নি এসব নেত্রীদের কাউকেই। অথচ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় তাদের হুংকার ও দাপটে কেঁপে উঠতো দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসগুলো।
সিট বাণিজ্য, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি এবং চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে একসময়ের এসব দাপুটে ছাত্রলীগ নেত্রীদের বিরুদ্ধে। শুধু ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল না তাদের এসব কার্যক্রম। ক্যাম্পাসের বাহিরেও নিয়ন্ত্রণ ছিল তিলোত্তমা শিকদার, আতিকা বিনতে হোসেইন, কোহিনূর আক্তার রাখি, তামান্না তানজিম তমা, তামান্না জেসমিন রিভা, শারমিন সুলতানা সনিসহ সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক নেত্রী। সাধারণ ছাত্রীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করারও অভিযোগ রয়েছে এই সব নেত্রীদের বিরুদ্ধে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যখন গোটা দেশ উত্তাল সেসময় ছাত্রলীগের তাণ্ডব ছিল চোখে পড়ার মতো। আর সেই আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইন। তিনি বলেছিলেন মাত্র সাত মিনিটেই ঢাকা ক্লিয়ার করবেন। তার এমন হুমকি সামাজিক মাধ্যমগুলোতে রাতারাতি ভাইরাল হয়ে পড়ে। ঘটনার এতোদিন পরেও নেটিজেনদের মনে একটাই প্রশ্ন উঁকি দেয় কোথায় সেই ছাত্রলীগ এইসব নেত্রীরা।
এদিকে গত ১৭ জুলাই ঢাবির ৬ হল রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে মেয়েদের পাঁচটি ও ছেলেদের একটি হল। রোকেয়া হল ছাত্রলীগের প্রীথা অন্তরা দাস, আতিকা ইসলাম আবিরকে হল থেকে বের করে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদেরকে টেনে হিঁচড়ে হল থেকে বের করে দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে তুমুল ভাইরাল হয়। এ ঘটনার পর থেকেই সামনে আসতে শুরু করে তাদের একের পর এক অশ্লীল কর্মকাণ্ডের ছবি ও ভিডিও।
নানান সময়ই বিতর্কিত সব মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছেন ছাত্রলীগ নেত্রী তিলোত্তমা শিকদার। জানা গেছে, তিনি ১০ বছরেও পার হতে পারেননি অনার্সের গণ্ডি।
গত ১৬ জুলাইয়ের পর থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে গভীর রাতে বোরখা পরে আবাসিক হল থেকে পালিয়ে যায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কেন্দীয় নেত্রীরা। প্রায় আড়াই মাস পরেও খোঁজ মিলছে না পালিয়ে যাওয়া এসব নেত্রীদের।