সরকার পদত্যাগ না করলে কঠোর কর্মসূচি: ১২ দলীয় জোট
অবিলম্বে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
নেতারা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শেষ। তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে সামনে কঠোর আন্দোলনের কর্মসুচি ঘোষণা করা হবে।
শনিবার (২০ মে) দুপুরে রাজধানীতে এক বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা এসব কথা বলেন।
‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে এই বিশাল বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলটি রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন সড়ক হতে শুরু হয়ে পল্টন মোড়, হোটেল প্রীতম ভবন ও নাইটিংগেল মোড় ঘুরে আবারও বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে গিয়ে শেষ হয়।’
এ সময় নেতা-কর্মীরা ‘চোর চোর ভোট চোর, শেখ হাসিনা ভোট চোর‘, ‘চাল-ডাল-তেলের দাম, কমাতে হবে কমিয়ে দাও,‘ ‘অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি, দিতে হবে দিয়ে দাও,‘ ‘দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার, এই মুহূর্তে দরকার‘ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
উল্লেখ্য যে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ এলডিপির অফিসে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া, সভায় বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টিকে চলমান যুগপৎ আন্দোলনে ১২ দলীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর আগে গত মার্চে ১২ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ লেবার পার্টি।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, আমাদের দাবি একটাই-অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম কমাতে হবে। এখন মানুষের জীবন সস্তা। দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি।
তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, কোনো বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বৈরিতা বা শত্রুতা তৈরি করবেন না। আপনারা এ দেশের মালিক নন। দেশের ১৮ কোটি মানুষ দেশের মালিক। কারণ, আপনারা ভোটারবিহীন সরকার। নিজেরা নিরাপদ থাকার জন্য ক্ষমতা ত্যাগ করে দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমরা আন্দোলনে ছিলাম এবং আছি ও থাকব।
তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। এই সরকারের কোনো অন্যায় নির্দেশ আপনারা মানবেন না।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, এই সরকারের সময় শেষ। আপনারা অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নিন।
বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আমরা বর্তমান অনির্বাচিত ও অবৈধ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে আছি। সামনে আরও কঠোর আন্দোলন আসবে। সরকার ভালোই ভালোই পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে গণভবন, বঙ্গভবন ও সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি আসতে পারে।
১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার সঞ্চালনায় আরও মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাপ-ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রধান, খান আসাদুর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শওকত আমিন, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির মহাসচিব মানসুর আলম শিকদার, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব নজরুল ইসলাম, জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এমএ বাসার, চাষী এনামুল হক, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হারুন সোহেল সহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
এমএইচ/এমএমএ/