সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে: রিজভী

ভেতরে ভেতরে সরকার আত্মশক্তি হারিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই অনির্বাচিত সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে। তাই সরকার বিভিন্নভাবে ডিজিটাল আইন দিয়ে ভয়ের রাজ্য তৈরি করেছে। কিন্তু সেই আইনের মাধ্যমে তারা নিজেরাই পরাজিত হচ্ছে এটা তারা টের পাচ্ছে না। হয়তো টের পাচ্ছে কিন্তু বলছে না। ভেতরে ভেতরে তারা আত্মশক্তি হারিয়ে ফেলেছে। ভেতরে ভেতরে শেখ হাসিনা পরাজিত হয়ে গেছে। আমরাই বিজয়ী।
মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, যে সরকারের পক্ষে জনসমর্থন থাকে না তারা নানা কায়দা-কানুন করে, জুলুম-নির্যাতন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিজেদের লোক বসিয়ে কিছুদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদিন থাকতে পারে না। এ সরকার দেশ রক্ষার ক্ষেত্রে, দেশের জনগণের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যর্থ। এ সরকার বিভিন্ন সময়ে জনগণকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে রাতের বেলা ব্যালট বাক্স পূর্ণ করেছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন করেছে। এটা এবার তারা করতে পারবে না। কারণ নানা স্তরের মানুষ এ সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। কর্তৃত্ববাদী সরকার কখনো বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতে পারে না।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই বিএনপির কর্মসূচিগুলো পালন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিএনপির যে ইউনিয়ন পর্যায়ে, উপজেলা পর্যায়ে, জেলা পর্যায়ে কর্মসূচিগুলো হয়েছে সেগুলোতে ব্যাপক হারে জনসমর্থন পেয়েছে এবং আন্দোলনগুলো সফল হয়েছে। যদি ব্যর্থ হতো তাহলে সরকার এত ধরপাকড় করত না। বিএনপির জনসমর্থন দিন দিন বাড়ছে বলেই সরকার ব্যাপক হারে গ্রেপ্তার করেছে এবং এখনো করছে। এত ধরপাকড় করেও যখন বিরোধী দলকে থামাতে পারে না তখন বুঝতে হবে এ সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে।
রিজভী বলেন, সরকারের যদি সুবুদ্ধি হয় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে তাহলে তাদের জন্য ভালো। আর যদি তা না করে তাহলে যুগে যুগে স্বৈরাচারী সরকারের যে অবস্থা হয়েছে হিটলার, মুসোলিনির যে অবস্থা হয়েছে সেই অবস্থা হবে। এ ছাড়া এ সরকারের অন্য কোনো ওয়ে আউট থাকবে না। সুস্থ হয়ে আউটের জন্য সরকার এখনো পারে একটা উদ্যোগ নিয়ে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে কত আন্দোলন বিপ্লব হয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি এই আন্দোলনে আমাদের অনেক সাথীকে হারিয়েছি তারপরও কেউ দমে যায়নি। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ ধমে যাবে না।
সংবিধানের বাইরে নির্বাচন হওয়ার সুযোগ নেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের এ বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, সংবিধানের মধ্যেই সংবিধান সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। ওরা গায়ের জোরে কথা বলছে। এটা কোনো রাজনৈতিক পরিভাষা হতে পারে না। তাহলে ১৯৯৫-৯৬ সালে কেমন করে হলো? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য তারা ধ্বংসাত্মক আন্দোলন করেছে। পুলিশ, নেতা-কর্মী, ছাত্র সবাইকে হত্যা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করলেন। ক্ষমতায় এসেই তা বাতিল করলেন। তাহলে আপনারা জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। যারা জাতির সঙ্গে প্রতারণা করে তারা কোনোদিনই জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে না।
এমএইচ/এসজি
