গণ-অভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটবে: খন্দকার মোশাররফ

দেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র নেই মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আগামীতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচন হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাসীও আজকে একই কথা বলছে। সরকার যদি সোজা পথে না আসে তবে অতীতের মতো গণ-অভ্যুত্থানে তাদের পতন ঘটবে।’
শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।
সংগঠনের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার আসম মেজবাহউদ্দিন, ডা. আওলাদ হোসেন শিল্পী ও যুব জাগপার সভাপতি মীর আমীর হোসেন আমু প্রমুখ।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই সরকারের লোকেরা সিন্ডিকেট করে বিদেশে টাকা পাচার করে প্রাসাদ বানাচ্ছে। তারা সবকিছুতেই সিন্ডিকেট করছে। আজকে বিদেশি গবেষণা সংস্থা বলছে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ছে।’
দেশে আইনের শাসন নেই, সুশাসন নেই, মানবাধিকার নেই। যে কারণে আমেরিকা বাংলাদেশের সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ প্রধানের নামে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সুতরাং দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই গায়ের জোরের সরকারকে হটানোর কোনো বিকল্প নেই, যোগ করেন তিনি।
সেজন্য সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। কোনোমতেই এই সরকারের অধীনে বিএনপি ও সমমনা যারা আছে সবাই একবাক্যে বলেছে তারা নির্বাচনে যাবে না।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে ভোট হলে কী হবে তা সবারই জানা। তারা আবারও ইভিএমে ভোট দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের আন্দোলন ও জনগণের দাবির মুখে নির্বাচন কমিশন ইভিএম বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আজকে যেভাবে বেঁচে আছি সেটাকে বেঁচে থাকা বলে না। কেউ কথা বলতে পারে না। ফেসবুকে কমেন্ট করতে পারে না। সাংবাদিকদের নির্যাতন করা হচ্ছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি তার বড় প্রমাণ। এই মামলার শুনানি আজকে ১০০ বার পিছিয়েছে। সাংবাদিকদের কোনো স্বাধীনতা নেই। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনাকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বলা হয় বলে ক্ষমতাসীনরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে নির্যাতন করছে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে কারও নিরাপত্তা নেই। তারা ৭২ থেকে ৭৫ সালে রক্ষী বাহিনী করে হাজার হাজার তরুণ ও মুক্তিযোদ্ধাকে তারা হত্যা করেছিল। ঠিক একইভাবে আজকে র্যাব বাংলাদেশের মানুষের উপর কী রকম নির্যাতন নিপীড়ন চালাচ্ছে তা দেশবাসী সবাই জানে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকারের আমালে আমাদের ৬ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করেছে, এখন হাজারের বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। বিএনপির ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ১ লাখের উপর মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অতএব ক্ষমতাসীন সরকার যদি সোজা পথে না আসে তাহলে অতীতে যেভাবে জনগণ গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়ে স্বৈরাচার হটিয়েছিল তেমনই ঘটবে। অতীতে স্বৈরাচার আইয়ুব টিকতে পারেনি। স্বৈরাচার এরশাদ টিকতে পারেনি। এই আওয়ামী লীগও পারবে না। আমি মনে সময় বেশি নেই এ দেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়াবে। এ ক্ষেত্রে বরাবরের মতো জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপা ভুমিকা রাখবে।’
এমএইচ/এমএমএ/
