মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা জরুরি: ডা. জাহিদ
একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, গুম, খুন, ক্রসফায়ারসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকার দেশকে মনুষ্য বসবাসে অযোগ্য করে ফেলেছে। তাই আমাদের তরুণরা আর দেশে থাকতে চাইছেন না। সুযোগ পেলেই তারা পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশে। বিদেশে যারা পড়তে যান তারা আর দেশে ফিরতে চান না। জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য লজ্জার।
জাহিদ হোসেন বলেন, একটি কার্যকর ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করছেন। এই রূপরেখা দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণে প্রায় অকার্যকর বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারে।
বুধবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরের একটি রেস্তোরাঁয় ইউনানি আয়ুর্বেদিক গ্রাজুয়েট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি মির্জা লুৎফর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে ও ডা. আমিনুল বারি কাননের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী।
ডা. জাহিদ বলেন, আইনের শাসন না থাকায় এখন ঘরে-বাইরে কারও জীবনের নিরাপত্তা নেই। কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয়- এমন নির্দোষ মানুষকেও অপরাধী বানিয়ে গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। গ্রেপ্তার করে কারান্তরীণ করা হচ্ছে, রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এমনকি হত্যা করা হচ্ছে। নওগাঁর সুলতানা জেসমিনকে রাস্তা থেকে র্যাব তুলে নেওয়ার পর পরিবারের কাছে লাশ ফেরত দেওয়া হয়েছে। কী দোষ ছিল জেসমিনের এখনো জানাতে পারেনি সরকার। মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি পর্যন্ত নেই আজ দেশে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বর্তমানে চাল, ডাল, লবণ, চিনি, তেল, মাছ-মাংস, মুরগি, ডিম এমনকি কাঁচামরিচসহ সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। টিসিবির পণ্য কিনতেও রীতিমতো যুদ্ধ করছেন মানুষ। চাল না পেয়ে ট্রাকের নিচে পড়ে থাকা চাল কুড়িয়ে মানুষ ক্ষুধা নিবারণ করছেন। অথচ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ না নিয়ে ব্যর্থ এ সরকার বিরোধীদল ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ ও দমনে ফ্যাসিবাদী কায়দায় ধারাবাহিকভাবে জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
দেশে এক ভয়ানক দুঃশাসন চলছে উল্লেখ করে পেশাজীবীদের এ নেতা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হওয়ায় মানুষ আজ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত। অপরাধীরা দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে। প্রতিবাদকারীরা হচ্ছে জুলুমের শিকার। আজ মানবাধিকার র্যাবের তপ্ত বুলেটে ক্ষতবিক্ষত। গণতন্ত্র পুলিশের বুটের তলায় পৃষ্ঠ। মানবতা আজ 'আয়নাঘরে' আহাজারি করছে। মানুষের ভোটাধিকার লুণ্ঠন করা হয়েছে। কেড়ে নেওয়া হয়েছে বাকস্বাধীনতা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা শৃঙ্খলিত করা হয়েছে। হরণ করা হয়েছে গণতন্ত্র। স্বৈরতন্ত্রের খোলসের ভেতরে দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার আজ মহামারি আকারে রূপ নিয়েছে। গুম, খুন, বিনা বিচারে হত্যা, ধর্ষণ সহ্যসীমা ছড়িয়ে গেছে। এ থেকে পরিত্রাণ দরকার। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন রাতের আঁধারে লুট হয়ে যাওয়া মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। লুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নিশ্চিত করা।
এমএইচ/এসজি