মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫ | ৯ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল চায় বিএনপি: ফখরুল

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে এখনো অনেকে গুরুত্বসহকারে নিচ্ছেন না বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘যে জাতি নিজে উঠে দাঁড়াতে পারে না, সে জাতিকে কে দাঁড় করাবে। আপনাদের (সাংবাদিক) বলছি, আপনারা কেউই বাঁচবেন না।’

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

গত সোমবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

মির্জা ফখরুল জানান, স্থায়ী কমিটির সভায় নিবর্তনমূলক আইন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করে জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ, সাংবাদিক এবং নাগরিকদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

সভায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমান, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক আবুল আসাদ, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ অন্যান্য সাংবাদিক এবং নাগরিকদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অবিলম্বে এই নিবর্তনমূলক কালো আইন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করার দাবি জানায় স্থায়ী কমিটি।

এ ছাড়া নওগাঁয় র‍্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে জনমত গড়ে তুলতে কর্মসূচি দেওয়া, বেআইনিভাবে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সাংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটি বিরোধী দলের কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীনদের হামলা এবং পুলিশের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানায়।

একইসঙ্গে রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয় সভায়। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘কী দুর্ভাগ্য এই দেশের, এত উন্নয়ন, চতুর্দিকে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে, কিন্তু অগ্নিনির্বাপণের জন্য যে আধুনিক ব্যবস্থা দরকার, সেই ব্যবস্থাগুলো এখানে নেই। ফায়ার ব্রিগেডের সেই সরঞ্জামই নেই। সরকারের গুরুত্ব হচ্ছে কোনখানে কমিশন বেশি পাবে, কোনখানে টাকার উপার্জন বেশি হবে-সেই জায়গায়। এর (অগ্নিকাণ্ড) জন্য দায়ী সম্পূর্ণভাবে সরকার।’

'আপনারা কেউই বাঁচবেন না' 

স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তগুলো জানানোর পর একজন সাংবাদিক মির্জা ফখরুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে একটা প্রশ্ন ছিল। আজকেও নির্বাচন কমিশন...।

প্রশ্ন শেষ করার আগেই মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাই, নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমরা কোনো কথা বলব না, এটা তো আপনারা জানেন। অযথা এই প্রশ্ন করে তো কোনো লাভ নাই। আপনারা বরং প্রশ্ন করতে পারেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে, সেটা তো করলেন না।’

তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী (আইনের ২১ ও ২৮ নম্বর ধারা নিয়ে) কী কথা বলেছেন, সেটা তো বললেন না। আইনমন্ত্রী একটা কথা বলেছেন, যে কথাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল অ্যাক্ট নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে যে সুপারিশ করা হয়েছে, সে ব্যাপারেও কেউ প্রশ্ন করলেন না। আপনারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে আছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা জিনিসটা (ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট) খুব গুরুত্বসহকারে নিচ্ছেন না। বিশেষ করে, তরুণ সাংবাদিকদের এটা আরও বেশি করে নেওয়া উচিত। আপনাদের সহকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে, সিকিউরিটি অ্যাক্টে হেয় করা হচ্ছে, বাট নো বডি রেসপন্ডিং। কোথায় যাবে এ জাতি, বলেন। যে জাতি নিজে উঠে দাঁড়াতে পারে না, সে জাতিকে কে দাঁড় করাবে। আপনাদের বলছি, আপনারা কেউই বাঁচবেন না।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে জার্মানির প্রধান বেতার সার্ভিস ডয়চে ভেলের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ তোলেন।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জার্মান মিডিয়া হাউস “ডয়চে ভেলে” কর্তৃক র‍্যাবের ওপর একটি ডকুমেন্টারি (তথ্যচিত্র) বেরিয়েছে। এটা খুব সেনসিটিভ হওয়ার কারণে আমাদের বেশির ভাগ পত্রিকা নিউজ করেনি।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সেনসিটিভ (সংবেদনশীল) হলেও এটা তো বাস্তবতা। এটাকে এখন পর্যন্ত অস্বীকার করা হয়নি। আমরা জানি, এ ধরনের ডকুমেন্টারি যখন কোনো মিডিয়াতে আসে, তারা কিন্তু সমস্ত দায়িত্ব নিয়েই কাজটা করে। এই ডকুমেন্টারি প্রমাণ করেছে, অনির্বাচিত সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই এ কাজগুলো করছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন (ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন) যে কী ভয়ংকর। যদি এমন হয় সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে, সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যদি নির্দেশ দিয়ে এ সমস্ত কাজ করা হয়, তাহলে এ ধরনের সংস্থাগুলো কী ভয়ংকরভাবে জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে পারে। যে কারণে র‍্যাবের ওপর যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এসেছে। যদিও এটা আমাদের জন্য লজ্জার।’

মির্জা ফখরুল জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা অবিলম্বে সংবিধানবিরোধী, মানবাধিকারবিরোধী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জোর দাবি জানিয়েছে। সভা র‍্যাব কর্তৃক বেআইনিভাবে গুম, হত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায় এবং এসব সংবিধান ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী সরকারের পদত্যাগ দাবি করে।

স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানানোর পর নরসিংদী জেলা বিএনপির কার্যালয়ে গতকাল বুধবার এবং তার আগে একাধিকবার দুষ্কৃতকারীদের হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। এর জন্য তিনি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দেন।

তিনি বলেন, ‘নরসিংদীতে গতকাল ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। গতকাল নরসিংদী বিএনপির কার্যালয়ে জেলা কমিটির মিটিং ছিল। কার্যালয়টি জেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্বে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবের (খায়রুল কবির) বাসার সঙ্গে লাগানো।’

সদস্যরা গিয়ে দেখতে পান কার্যালয়ের দরজায় তালা লাগানো, চারদিকে পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে। সদস্যরা ব্যারিকেড ডিঙিয়ে তালা ভেঙে অফিসে যান, সভা শুরু হয়। কিন্তু সভার শেষের দিকে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ শুরু হয় এবং দেখা যায়, কিছু দুষ্কৃতকারী পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় সেখানে আক্রমণ করে। জানালা, দরজা ভেঙে যায়, ককটেল মিটিংয়ের মধ্যেও পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই সভা পণ্ড হয়ে যায়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কথা হচ্ছে, একটা রাজনৈতিক দল জেলা কার্যালয়ে সভা করবে, এটা তার সংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায় তারা (দুষ্কৃতকারী) কী করে ভেতরে ঢুকল, ককটেল চার্জ করল এবং সভা পণ্ড করল। এর আগ ২৬ ফেব্রুয়ারি দলীয় কার্যালয়ে এই দুর্বৃত্তরাই আক্রমণ করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সেটাও পুলিশের ছত্রচ্ছায়ায়।’

এসব ঘটনার সঙ্গে বিএনপি ও ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা জড়িত বলে গণমাধ্যমে এসেছে বলে জানালে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে অনেক রকম কথা বলবে তারা।’

প্রশ্ন হচ্ছে, সে যেই হোক, একজন দুষ্কৃতকারী যখন এ ধরনের কাজ করে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটা হচ্ছে সরকারের দায়িত্ব, পুলিশের দায়িত্ব। আমরা লক্ষ করেছি, ইদানীং এই নরসিংদীর পুলিশ প্রশাসন তারা প্রত্যক্ষভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এবং বিএনপির নেতা-কর্মীদের তারা বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে, যোগ করেন তিনি।

এমএমএ/

 

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা

ছবি: সংগৃহীত

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি ফেডারেল মামলা দায়ের করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের দাবি, কোটি কোটি ডলারের ফেডারেল তহবিল জব্দ করে প্রতিষ্ঠানের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

একটি কমিউনিটি বার্তা ঘোষণায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যালান গার্বার এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‌‘গত সপ্তাহে হার্ভার্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অবৈধ দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর ফেডারেল সরকার বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। যেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক বড় ক্ষতি।

তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে, আমরা তহবিল স্থগিত করার জন্য একটি মামলা দায়ের করেছি, কারণ এটি বেআইনি এবং সরকারের কর্তৃত্বের বাইরে।

হার্ভার্ডের মামলায় উল্লিখিত মার্কিন সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, বিচার বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ এবং জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।

তিনি বলেন, সরকারের তহবিল হ্রাসের কারণে, গবেষণা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শিশুদের ক্যান্সার, সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব এবং আহত সেনাদের ব্যথা উপশম করা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মুখোমুখি লড়াইয়ে লিপ্ত, হোয়াইট হাউস প্রতিষ্ঠানটির ২.২ বিলিয়ন ডলার অনুদান জব্দ করেছে। বিশ্বের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি ক্যাম্পাস বিক্ষোভের ওপর সরকারের দাবি অমান্য করার পরে তহবিল জব্দ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লড়াই চলছে। বিশ্বের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি ক্যাম্পাস বিক্ষোভের বিষয়ে সরকারের দাবি অমান্য করার পর হোয়াইট হাউস হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ২.২ বিলিয়ন ডলারের অনুদান আটকে দিয়েছে। এই নিয়ে শুরু হয়েছে সংঘাত।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, যাতে যাতে অ্যাকাডেমিক কর্মসূচির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়, তার জন্য চাপ সৃষ্টির করার অংশ হিসেবে ওই তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই যুক্তি দেখিয়েই ওই মামলা করা হয়েছে।

এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোস্টনের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, সরকার ইহুদি-বিদ্বেষমূলক উদ্বেগ এবং চিকিৎসা, বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত এবং অন্যান্য গবেষণার মধ্যে কোনো যুক্তিসঙ্গত সংযোগ সনাক্ত করতে পারেনি এবং পারেও না।

Header Ad
Header Ad

ঢাকার দুই সিটি একীভূত করার প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম শক্তিশালী করতে এক গুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে একত্রিত করে একটি বৃহত্তর ঢাকা মহানগরী কাউন্সিল এবং পুরো ঢাকা শহরকে ২০টি সিটি কাউন্সিল গঠন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এতে সিটি করপোরেশনের বর্তমান ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করেন তারা।

ঢাকা সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াসা, রাজউক, ডিএমপি, তিতাস. ডেসা, ডিপিডিসিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ওপর মেয়রের কর্তৃত্ব বাড়বে। করপোরেশনের সেবা কার্যক্রম সমন্বিত করার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে খবরদারি করতে পারবেন তিনি।

ঢাকা মহানগরীতে কম-বেশি ২০টি সিটি কাউন্সিল করার প্রস্তাবও করা হয়েছে। কাউন্সিলপ্রধান একজন মেয়রের মতো হলেও কাজের ধরন হবে ভিন্ন। সেন্ট্রাল সিটি করপোরেশনের হাতে থাকবে প্রশাসনিক ক্ষমতা। সেন্ট্রাল শুধু সিটির নিরাপত্তা, আইনি দিক, বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা, ট্যাক্স আদায় করবে। আর কাউন্সিলগুলোর কাজ হবে অধীনস্থ এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিধন কার্যক্রমসহ অন্যান্য সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা।

নতুন এই ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ‘বর্তমান ব্যবস্থায় সিটি করপোরেশন কাঠামো ও কার‌্যাবলী পর্যাপ্ত নয়। এ জন্য আমরা সিটি গভর্নমেন্টে গুরুত্ব দিয়েছি। লন্ডনে যেমন সিটি গভর্নমেন্ট রয়েছে। প্রস্তাবনা বাস্তবায়িত হলে মেয়রের ক্ষমতা বাড়বে। অন্যান্য সেবা সংস্থায় মেয়রের কর্তৃত্ব বাড়ানোর চিন্তা করা হয়েছে। এতে করপোরেশনের সেবা সংস্থাগুলোর কাজে সমন্বয় হবে এবং কাজ ত্বরান্বিত হবে।

প্রস্তাবনায় আরও রয়েছে, দীর্ঘ মেয়াদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্য দ্বি-স্তর বিশিষ্ট মহানগর সরকার (সিটি গভর্নমেন্ট) সৃষ্টির ব্যবস্থা গ্রহণ। মধ্য মেয়াদে অন্যান্য সিটি করপোরেশনে সিটি গভর্নমেন্ট সৃষ্টির পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা।

প্রস্তাবিত সিটি করপোরেশন কাঠামো : সিটি করপোরেশনের দুটি অংশ। একটি বিধানিক, অন্যটি নির্বাহী। বিধানিক অংশে থাকবেন নির্বাচিত কাউন্সিলররা, কাউন্সিল নেতা (মেয়র), ছায়া কাউন্সিল নেতা, সভাধ্যক্ষ, স্থায়ী কমিটি (৫-৭), সচিব, কাউন্সিল কর্মী। নির্বাহী অংশে থাকবেন মেয়র ও মেয়রস কাউন্সিল, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশনের বিদ্যমান অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দপ্তর।

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের অন্যান্য প্রস্তাবনা : স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনস্থ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে একত্রিত করা। এ ক্ষেত্রে ‘জন প্রকৌশল সেবা’ নামক একটি নতুন অধিদপ্তর সৃষ্টি করার সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, দেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে বেশিরভাগই প্রায় বন্ধ। তাই ভবিষ্যতে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে সমস্ত জনবল, সেবা ও সরবরাহ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হতে পারে।

এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে পরিবেশ কর ও পর্যটন কর আরোপের উদ্যোগ নিতে হবে। বেসরকারি/ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের জন্য স্থানীয় সরকারকে কর দিতে হবে। করের হার নির্ধারণে টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে কর আদায়ের কর্তৃত্ব শুধু ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনকে দিতে হবে। উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ নানা ফি ও সার্ভিস চার্জ আদায় করতে পারলেও কর আদায়ের অধিকারী হবে না।

তিন পার্বত্য জেলার সরকারি ৩০টি দপ্তরের যাবতীয় কাজ, জনবল ও অর্থ তিন জেলা পরিষদের কাছে সম্পূর্ণ হস্তান্তর করতে হবে। তিন পার্বত্য জেলার সব ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভাগুলোকে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা ও এসব প্রতিষ্ঠানের বাজেট স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করার সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে- জাতীয়ভাবে আহরিত মূসকের এক-তৃতীয়াংশ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দ করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে কেন্দ্রীয় সরকার আহরিত মোট রাজস্বের এক-চতুর্থাংশ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তর করতে সুপারিশ করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত রবিবার স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রধান ড. তোফায়েল আহমেদ পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। এ সময় কমিশনের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

 

Header Ad
Header Ad

নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও সরকারের চাওয়ায় পার্থক্য বেশি না: নজরুল ইসলাম

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও সরকারের অবস্থানে খুব বেশি পার্থক্য নেই। তিনি জানান, সরকার যদি বলে যে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে, তাহলে তা ডিসেম্বরে হতে পারে বলেই ধরে নেওয়া যায়। এ অবস্থায় বিএনপি শুধু চায়, ডিসেম্বরের একটি তারিখ ধরে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক।

সোমবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ লেবার পার্টির নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “সরকার তো বলেনি ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে না। আমরাও বলছি না আজই নির্বাচন হোক। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন ডিসেম্বরে হলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তাহলে এত বড় পার্থক্য কোথায়?”

এ সময় প্রশাসনে ‘বিএনপির লোক’ বসানোর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নজরুল ইসলাম বলেন, “যিনি এই অভিযোগ তুলেছেন, তিনি নিজেই সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। বিএনপিকে তো প্রশাসন থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। সেই সময় বৈষম্যের শিকার হওয়া ৭০০ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিলেও, এখনো তাদের কাউকে পদায়ন করা হয়নি।”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কোথায় বিএনপির লোক বসানো হয়েছে? যারা সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাদের যদি একজনও এখন কোনো পদে থাকতেন, তাহলে বলা যেত। আসলে এসব প্রশ্ন আমাদের না করে তাদের করা উচিত।”

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা
ঢাকার দুই সিটি একীভূত করার প্রস্তাব
নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও সরকারের চাওয়ায় পার্থক্য বেশি না: নজরুল ইসলাম
দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে অব্যাহতি
দুই বাংলাদেশি কৃষককে ধরে ভারতে নিয়ে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল
গাইবান্ধায় অপহরণের দুই ঘন্টা পর এসএসসি পরীক্ষার্থী উদ্ধার, আটক ২
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি
কাতারের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশনে কুয়েট শিক্ষার্থীরা
২০ দিনে ৫০ কোটিরও বেশি আয় করল শাকিবের 'বরবাদ'
ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহার
টাঙ্গাইলে ১০ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
ঢাকা-৫ আসনের সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
কারাগার থেকে দুটি শীতের সোয়েটার হারিয়ে গেছে: কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে পলক
খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের গোপন আস্তানার সন্ধান
বাকৃবিতে পারভেজ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি
যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সুরক্ষায় অকার্যকর বেনাপোল এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন
পলাতক সব এমপি মন্ত্রীদের আইনের আওতায় আনা হবে: প্রেস সচিব
হাসিনাসহ শেখ পরিবারের ১০ সদস্যের ‘এনআইডি লক’