‘শেখ হাসিনার দুঃশাসনের প্রকোপ বিপজ্জনক রুপ ধারণ করছে’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রকে মাটিচাপা দেওয়ার পর দেশকে একদলীয় দুঃশাসনের চরম অন্ধকারে নিপতিত করতে বর্তমান গণবিচ্ছিন্ন ও ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির উপর হামলা, গ্রেপ্তার ও ভাঙচুর চালাতে লাগামহীন ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনের প্রকোপ ক্রমশ বিপজ্জনক রুপ ধারণ করছে। ভোটারবিহীন সরকার আইনের সীমানার মধ্যে না থেকে চরম সীমা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে পদদলিত করছে নিষ্ঠুর দমন নীতি অবলম্বন করে। এই অগণতান্ত্রিক সরকার গণতন্ত্রের বিধি-বিধান ও নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা করে না বলেই বিএনপিসহ দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর যেকোনো শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশসহ মত প্রকাশে নগ্নভাবে বাধা প্রদান করছে।
শনিবার (১ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং পূর্ব ঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আজ দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে বিএনপির উদ্যোগে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিভিন্ন অঞ্চলে পুলিশি হামলা, নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিবৃতি দেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ বলেই দেশে মানবতা, সভ্যতার চিহ্নও ক্রমাগতভাবে মুছে যাচ্ছে। দেশে এখন চলছে আদিম অরণ্যের আইন। বিকৃত দুঃশাসনে জনজীবনে ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজমান। দুঃশাসনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ জনগণের উপর সরকার পুলিশি শক্তিকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করছে। এই কারণেই রাষ্ট্র ও সমাজে বিরাজমান রয়েছে চরম অস্থিরতা ও নৈরাজ্যকর পরিবেশ। সরকারি মদদে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এখন আইনানুযায়ী কাজ করতে পারছে না। মনে হয় তারা বিরোধী দল দমনে ফ্রি লাইসেন্স পেয়ে গেছে। দেশে ভীতি ও শঙ্কা বিদ্যমান রাখার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো-সরকারের অবৈধ ও স্বেচ্ছাচারী শাসন নিয়ে কেউ যেন মাথা উঁচু করে কথা বলতে সাহস না পায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু সাঈদ চাঁদ, পবা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোজাফফর হোসেন, চারঘাট উপজেলার ভায়া লক্ষীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মৃধাসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের ৭ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার এবং ব্যাপক লাঠিচার্জের মাধ্যমে অনেক নেতা-কর্মীকে আহত ও আজকের অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড করা, জামালপুরে ১৮ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার, খুলনা মহানগর বিএনপি আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে পুলিশের টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে গুরুতর আহত বিএনপি নেতা ইবাদুল হক রুবায়েদ, হাসানুর রশীদ মিরাজ, ইশতিয়াক আহমেদ ইসতি, ইমতিয়াজ আলী সুজন ও ফিরোজ মাহমুদসহ ৪০ জনের অধিক নেতা-কর্মী আহত হওয়া, কিশোরগঞ্জে কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা ও কোনো কারণ ছাড়া ফাঁকা গুলি বর্ষণ ও নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের চেষ্টা, পুটুয়াখালী জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরসহ পিরোজপুর জেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলা ও ভান্ডারিয়া বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ আহমেদ সোহেল মনজুর সুমনের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা আওয়ামী সরকারের চলমান নির্যাতন-নিপীড়নের ধারাবাহিক চিত্র। আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই-জুলুমের পথ থেকে অবিলম্বে সরে আসুন। নইলে গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করার জন্য যুগে যুগে সকল স্বৈরাচারের মতোই বর্তমান সরকারের পতন অনিবার্য।
বিবৃতিতে গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি আহত নেতা-কর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।
এমএইচ/এসআইএইচ