ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী প্রত্যাহারে বাধ্য করা হচ্ছে: চুন্নু
গত কয়েক মাসে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নামে সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেছেন, চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনে শাসকদলের কর্মীরা জাতীয় পার্টি প্রার্থী ও সমর্থকদের মারধর করেছে। কোথাও কোথাও নির্বাচন থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে। অত্যাচারের কারণে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে কোনো সুফল পাইনি।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) টাঙ্গাইল-০৭ আসনের উপ-নির্বাচনসহ চলমান সকল নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার দাবিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দল।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপির নেতৃত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব এটিইউ তাজ রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আখতার এমপি।
বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, এর আগে সিরাজগঞ্জের একটি উপ-নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে। উপ-নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যে নৈরাজ্যকর অবস্থা হয়েছে তাই আমাদের শঙ্কিত করছে মির্জাপুরের নির্বাচন নিয়ে।
তিনি বলেন, বর্তমান কমিশনের অধিনে টাঙ্গাইল-০৭ আসনের নির্বাচনটাই শেষ নির্বাচন। বিশেষ করে শাসকদলের কর্মী ও লোকাল প্রশাসন অনেক সময় অতি উৎসাহী হয়ে শাসকদলের প্রার্থীর পক্ষে নির্লজ্জভাবে কাজ করতে চায়। নির্বাচন কমিশন তাদের যেন কন্ট্রোল করে এবং নির্বাচন যেন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়। মানুষ যেন ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ যেন সৃষ্টি হয় তার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে অনুরোধ করেছি।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাদের আশস্ত করেছেন নির্বাচন অবাধ করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও ভোটারদেরও দায়িত্ব আছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন অনেক সময় চাইলেও পারে না, যদি শাসকদল ও নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ না হয়। তিনি বলেন, নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনের অর্ডার পালন করতে স্থানীয় প্রশাসন বাধ্য এমন আইন আছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের অর্ডার না শুনলে কী হবে তা আইনে লেখা নেই। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিতে নির্বাহী বিভাগের কাছে পাঠাবে, এখন পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে এমন কোনো উদাহরণ নেই।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে একটি আইন করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। যাতে নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের অর্ডার কেউ না মানলে নির্বাচন কমিশনই সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি মহাসচিব বলেন, নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমাদের কোনো প্রার্থী নেই। দলীয়ভাবে জাতীয় পার্টি থেকে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হয়নি। তাই কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কোনো দলীয় সিদ্ধান্ত নেই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- দপ্তর সম্পাদক-২ এমএ রাজ্জাক খান, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি-২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী।
এসএম/টিটি/