ঢাকাসহ ১০ বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশের ঘোষণা বিএনপির
জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ ১০ বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশের ঘোষণা করেছে বিএনপি।
বুধবার (২৮ সেপ্টেমম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কর্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এর আগে গত সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্বান্ত গৃহিত হয়। দলের এই সিদ্বান্ত জানাতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিভাগ দিয়ে শুরু হবে এই সমাবেশ। সর্বশেষ সমাবেশ হবে ১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণবিরোধী কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকার কর্তৃক চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যদির মূল্যবৃদ্ধি, চলমান আন্দোলনে ভোলায় নুরে আলম ও আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সিগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন ও যশোরে আব্দুল আলিম মোট ৫ জন হত্যার প্রতিবাদে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে আগামী ৮ অক্টোবর হতে সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কর্মসূচি গুলো হলো
আগামী ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর, ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী এবং ১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণে দলের ঘোষিত ১৬টির মধ্যে ১৪টি সমাবেশ করে বিএনপি। মিরপুরের পল্লবীতে সমাবেশ শুরুর আগে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় সেটি পণ্ড হয় এবং লালবাগের সমাবেশ স্থগিত করা হয়। এর আগে ২২ আগস্ট থেকে থানা, উপজেলা, পৌর, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি করে বিএনপি। লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও অন্যান্য সকল মহানগর ২৯ ও ৩০ জুলাই এবং সকল জেলা পর্যায়ে ৩১ জুলাই বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি। এ ছাড়া ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে।
এসব কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হয়। ভোলায় পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা নুর আলম, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতা শাওন প্রধান ও মুন্সিগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন নিহত হয়েছে।
এসব ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির আন্দোলন দমাতে সরকার হত্যা, নির্যাতন ও মামলার আশ্রয় নিয়েছে। অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, চলমান আন্দোলনে নিহত কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ৬ অক্টোবর দেশের সকল মহানগরে ও ১০ অক্টোবর জেলা পর্যায়ে শোক শোভাযাত্রা করবে বিএনপি। জনগনকে বিএনপির কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের উপর ছাত্রলীগ হত্যার উদ্দেশে হামলা চালিয়েছে। তীব্র নিন্দা ও চিহ্নিতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি। উপাচার্য ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তার অপসারণ দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
এসআইএইচ