বিএনপির উপর হামলার কোনো নির্দেশনা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দেয়নি: কাদের
বিএনপির উপর হামলার কোনো নির্দেশনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ‘দেয়নি’ জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলের কথার বাইরে গিয়ে কেউ হামলায় জড়িয়ে গেলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেন।
কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিএনপি নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ-মারামারিতে জড়াচ্ছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি বলছে কুমিল্লায় ও ঢাকায় হামলা হয়েছে, কিন্তু গতকাল বরিশালে আর চট্টগ্রামে মারামারি করেছে কারা? বরিশালে তারা নিজেরা নিজেদের উপর হামলা করেছে, চট্টগ্রামেও চেয়ার ছোড়াছুড়ি করেছে।’
এসব ঘটনা ঠিকভাবে সংবাদমাধ্যমে আসছে না মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা মাত্র একটা কাগজে দেখেছি। তাদের নেতিবাচক সংবাদও ছাপে না অনেকে। বলতে চায় না। কেন, জানি না। বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখছি আমরা।’
সংঘাতের জন্য বিএনপিকে দায়ী করার পাশাপাশি নিজের দলের কর্মীদেরও সতর্ক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘নেত্রীর নির্দেশনার বাইরে কেউ যদি এসব হামলা জড়িয়ে পড়েন, আমরা কিন্তু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। এখানে কেন্দ্রের কোনো নির্দেশনা নেই।’
বিচ্ছিন্নভাবে এখানে-ওখানে দুয়েকটা ঘটনা ঘটিয়ে আজকে সরকারের দুর্নাম, আওয়ামী লীগের দুর্নাম। এগুলো যারা করবে সহ্য করা হবে না। আর এইটার সুযোগ নিয়ে তারা আমাদের অপবাদ দেবে।
গত কিছুদিনের বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠকের ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে চলে যায় বিভিন্ন দূতাবাসে। নালিশ করে। বিএনপির আরেক নাম বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। দেশের মানুষের কাছে যতটা না করে, তার চেয়ে বেশি বিদেশিদের কাছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা জানে না শেখ হাসিনা তার পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো, কখনো পিছপা হন না। কখনো পরাজয়, পরাভয় মানেন না। শেখ হাসিনা হার মানতে জানেন না। তিনি হেরে গেলে বাংলাদেশ হেরে যাবে।বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা (বাংলাদেশকে) পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিল; তাদেরই প্রেতাত্মারা, তাদেরই দলের সেই সৈনিকরা, সেই দল বাংলাদেশকে আবারও পাকিস্তান বানাতে চায়।’
মির্জা ফখরুল মনের কথা গোপন রাখতে পারেননি। তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছে যে, ‘পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম’।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব, ‘কত রবি জ্বলে রে, কেবা আঁখি মেলে রে।’ শুনেছি পাকিস্তান ফিরে পেতে চান। এই মুক্তিযুদ্ধের দেশে আমরা আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে পাকিস্তানপন্থিদের হাতে তুলে দেব না। এই শপথ আমাদের নেতারা নিচ্ছি। আবার বলে পাকিস্তানের নাম শুনলেই আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ হয়। হ্যাঁ গাত্রদাহ হয়। গাত্রদাহ তো হবেই, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমি স্বাধীন। আমার গাত্রদাহ হবে না?’
পাকিস্তান যে ৫০ বছর পরও বাংলাদেশে গণহত্যার জন্য ক্ষমা চায়নি, সে কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা ক্ষমা চাইতে জানে না। সেই পাকিস্তানের প্রতি আপনার এত পেয়ার কেন? জানতে পারি কি? তাহলে তো এটাই সত্য, একাত্তরের প্রতিশোধ নিতেই জিয়াউর রহমান পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। সেটাই তো প্রমাণিত হয়। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।
সভায় আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এমএমএ/