জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সরকার: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারের নির্যাতনকারী বাহিনী ফার্মগেট ইন্দিরা রোড থেকে বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর থেকে ১২ বছর অতিবাহিত হলেও পরিবার ও দলের লোকেরা কোথাও তার সন্ধান পাইনি। এখন পর্যন্ত সরকার চৌধুরী আলমের কোনো খোঁজ দিতে পারেনি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই ধরনের গুমের অনেক ঘটনা ঘটেছে। শুধুমাত্র আমাদের দলেই ৬০০’র অধিক নেতা-কর্মী গুম হয়ে আছে। আজ পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান সরকার দিতে পারেনি; যা তাদের দায়িত্ব।
শুক্রবার (২৪ জুন) গুম হওয়া বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের পরিবারের খোঁজ খবর নিতে গিয়ে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার আইনে পরিষ্কার বলা আছে- জোর করে কাউকে যদি গুম করা হয় তাহলে সেটা হচ্ছে মানবাধিকারবিরোধী অপরাধ। গুমের এই ঘটনাগুলোতেই প্রমাণ হয়, এ সরকার একেবারেই কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী সরকার। তাদের ১৫ বছরে দুঃশাসনে বাংলাদেশের কত মানুষ সন্তান হারা হয়েছে, কতজন স্বামীহারা, কতজন পুত্রহারা তার সঠিক হিসাব দিতে পারব না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে যাদের গুম করা হয়েছে তাদের জীবনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু গুম নয়- প্রতিটি ক্ষেত্রে এ সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, যে কারণে এই সরকারকে একমাত্র জনগণের শত্রু হিসেবে আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। গুম-খুন-হত্যা-নির্যাতন ও ভোটের অধিকার হরণ করার দায়ে এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করে অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের কাউকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। এরা অনর্গল মিথ্যা কথা বলেন, এদের মতো মিথ্যা কেউ বলতে পারে না। আর মুচলেকা দিয়ে ১/১১ সরকারের সময় কে আমেরিকায় গিয়েছিল সেটা আমরা জানি, নামটা বলতে চাই না।
সিলেট সুনামগঞ্জ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ অনেক কষ্টে আছে। সেনাবাহিনী নামানোর পর তারা কিছু ত্রাণ পৌঁছে দিতে কাজ করছে, কাজ করছে এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সবচেয়ে বেশি কাজ করছে আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা। তারা নৌকা ভাড়া করে ত্রাণ নিয়ে দুর্গত মানুষের দরজায় পৌঁছে দিচ্ছে। অথচ সম্প্রতি অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে বন্যা দুর্গত এলাকায় গিয়ে সার্কিট হাউসে নামমাত্র ১০ জনকে টোকেন দিয়ে বলে দিলেন, কোনো সমস্যা নেই। সব সমাধান হয়ে যাবে। আমি অবিলম্বে বন্যাকবলিত অঞ্চলকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি করছি। একই সঙ্গে বলছি, যে কারণে বন্যা তার কারণ খুঁজে বের না করে, আরও বন্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করছে সরকার। সবাই জানেন রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের প্রাইজ প্রজেক্ট ইটনা মিঠামইন হাওরের মাঝখান দিয়ে যে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে সেটা পানি প্রবাহ বাধা সৃষ্টি করছে।
এসএন