দেশের মানুষের দেহ-মন সার্বক্ষণিক নজরদারিতে: রিজভী
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার তাদের সমালোচনাকারীদের কড়া নজরদারির মধ্যে রেখেছে। এখন বাংলাদেশের মানুষের দেহ ও মন সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে। এ সমস্ত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব মূলত দমনমূলক তত্ত্ব।
বুধবার (২২ জুন) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে সরকার যত সমালোচনার মুখে পড়েছে সেটিকে আড়াল করতেই তারা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সাজিয়েছে। এ সেতুকেন্দ্রিক দুর্নীতি পাগলা ঘোড়ার মতো বেসামাল হয়ে পড়েছে। মানুষের সমালোচনাকে বাকরুদ্ধ করার জন্যই দমননীতি কার্যকর করা হচ্ছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, পদ্মা সেতুর দুর্নীতি, সিলেটসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এ ছাড়া প্রচণ্ড মূদ্রস্ফীতির কারণে দ্রব্যমূল্য হু হু করে বেড়েই চলেছে। এসব বিষয়ে সরকার বিরোধী দলের সমালোচনাকে দমন করতে দলবাজ কিছু শিক্ষক ও মিডিয়ায় নাশকতার অপপ্রচার চালাচ্ছে। এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবে আমাদের উপস্থিতি নিয়ে নাটক শুরু করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়াকে কেন্দ্র করে যে নাটক করা হচ্ছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এক দেশে দুই আইন। ক্লাবসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের অভয়ারণ্য। অনেক রাত পর্যন্ত তারা ক্লাবে আড্ডা দেন এবং লনটেনিস খেলাসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড চালান। তাদের জন্য সাত খুন মাফ। অথচ কোনো শিক্ষকের আমন্ত্রণে বিরোধী দলের কোনো নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সময়ের জন্য অবস্থান করলেই তারা নাশকতার গন্ধ পান।
রিজভী আরও বলেন, অন্য দেশের অনেক শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীকে অহরহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যার অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অগোচরে ব্যক্তিগত বা বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারা দিব্যি সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাপিয়ে বেড়ায়। মূলত রাষ্ট্র বিরোধী দলের ওপর অত্যাচার করছে বা প্রতিশোধ নিচ্ছে।
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা আসলেই আমাদের সমাজের অভ্যন্তরে অঘোষিত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার ক্ষমতা অজেয় ও তার কর্তৃত্ব অনতিক্রম্য। কয়েক দিন আগে শেখ হাসিনা আরও বেশি ক্ষমতা চান বলে জানিয়েছেন। এ মনোবৃত্তি হিটলার-মুসোলিনির মতো। এখনই শেখ হাসিনার যে ক্ষমতা তাতে গণতন্ত্র, নির্বাচন, বাক-স্বাধীনতা দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এরপর আরও বেশি ক্ষমতা অধিকারী হলে শেখ হাসিনা দেশটাকে কোনো পর্যায়ে নিয়ে যাবে তা চিন্তা করতেও গা শিউরে ওঠে। আর্তনাদ আর হাহাকারে দেশটা ভরে উঠবে। শুরু হবে অন্ধকার প্রতিক্রিয়া ও দাসত্বের বাতাবরণ।'
এসএন