একটি কার্যকরী আন্দোলন গড়ে তুলতে ফলপ্রসূ হয়েছি: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চলমান রাজনৈতিক অবস্থা বিশেষ করে বর্তমানের কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী সরকার যে গণতন্ত্র হরণ, মানুষের ভোটাধিকার হরণ, বাকস্বাধীনতা হরণ করা, অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়া, রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার যে ভয়াবহ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তার বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করে একটি কার্যকরী আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য প্রায় সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারই অংশ হিসেবে আজ জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেছি।'
তিনি বলেন, 'আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। আলোচনায় মূল দাবি-খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে গৃহান্তরীণ করে রাখা হয়েছে, তার মুক্তি, তারেক রহমানকে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লক্ষ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে, সেই মামলাগুলো প্রত্যাহার এবং এই সরকারের পদত্যাগ। সরকারের পদত্যাগের পর সংসদ বিলুপ্ত করা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা তাদের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, দলগুলোর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে যে নতুন সংসদ গঠন নতুন সরকার গঠন করা এই বিষয়গুলোতে প্রায় একমত হয়েছি।'
দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সঙ্গে সংলাপে বসেছে বিএনপি। বুধবার (৮ জুন) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত শুরু হয়।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার বলেছেন, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে একটি ব্যাপক ঐক্য গড়ে তোলার জন্য যা যা করণীয় সম্ভব তার সম্ভাব্য দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি আমরা ঐক্যমতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি যে বর্তমানে স্বৈরশাসক বিরোধী ছাড়াই রয়েছে যেকোনো রাজনৈতিক দল সংগঠন রাজনৈতিক শক্তি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা সংযুক্ত রাজনৈতিক কর্মসূচির দিকে কিভাবে অগ্রসর হতে পারি সে প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাবো। সেই লক্ষ্যে সর্বপ্রথম প্রধান দাবি এই সরকারের পদত্যাগ প্রথমত এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে চলে যেতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে তারপর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন, নতুন নির্বাচন। সরকার বিরোধী সকল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।
সংলাপে বিএনপির প্রতিনিধিদলে রয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে সংলাপে অংশ নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস খান, মোঃ সেলিম মাস্টার, মজিবুর রহমান, মাওলানা নুরুল আমিন, যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীম, কাজী মোঃ নজরুল, দপ্তর সম্পাদক গোলাম মোস্তফা প্রমূখ।
গত ২৪ মে বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করেছে দলটি। যা চলতি মাসেই শেষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। সেই বিবেচনায় সংলাপ শেষে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পথে রুপ নেবে বলে আশাবাদী হয়ে উঠছে বিএনপির নেতৃত্ব।
ইতিমধ্যে নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ২০ দলীয় জোট শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টি-বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সঙ্গে সংলাপ করেছে বিএনপি। সেই ধারাবাহিকতায় আজ জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সঙ্গে সংলাপে বসেছে দলটি।
এমএইচ/এএস