সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
উন্নয়নের পথে দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪২তম জাতীয় সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
গাজীপুরের সফিপুর আনসার ভিডিপি অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এ সমাবেশে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
'দেশকে এগিয়ে নিতে সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করবে’- এ আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে তার জন্য সকলে প্রচেষ্টা চালাবেন সেটাই আমি আশা করি।'
দেশের উন্নয়ন অব্যহত রাখতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশের গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ শান্তির দেশ। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। আর দেশের উন্নয়ন মানে প্রতিটি পরিবারের উন্নয়ন। প্রতিটি পরিবার সচ্ছ্বলভাবে জীবনযাপন করুক, সুন্দরভাবে বাঁচুক- সেটাই আমরা চাই। সেজন্য একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখা একান্তভাবে প্রয়োজন।
দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করতে বলেন তিনি।
সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে, ৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দিয়েছি। তারই ভিত্তিতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে আমরা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। আমরা এখানেই থেমে থাকিনি, আমাদের শতবর্ষের প্রোগ্রামও আমরা নিয়েছি- ডেল্টা প্ল্যান ২১০০।'
তিনি বলেন, 'এই বদ্বীপ অঞ্চল, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে যেন রক্ষা পায় এবং এদেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে সেই পরিকল্পনাটাও আমি দিয়ে গেলাম।'
টানা তিনবারের সরকার প্রধান বলেন, ২১০০ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছি যাতে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কখনো কেউ ব্যাহত করতে না পারে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, আমরা প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে আমি মনে আপনাদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করবেন সেটাই আমরা আশা করি।
দেশের মেগা প্রকল্পসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তিদের নিরাপত্তা প্রদানে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিশেষ অবদানের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ নির্মূলে আনসার সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি। এক্ষেত্রেও আমাদের আনসার ভিডিপি বাহিনী সব সময় সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, মৌলবাদ নির্মূলে বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস, যখন তারা বাস, গাড়ি রিকশা, ভ্যান, এমনকি রেলগাড়ি, রেললাইনে যখন অগ্নিসন্ত্রাস চালাচ্ছিল, আগুন দিচ্ছিল, আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারছিল, তখন রেললাইনের দায়িত্ব আনসার ভিডিপিকে দেওয়া হয়েছিল। তারা তা যথাযথভাবে পালন করে যান। এ ধরনের কাজ করতে গিয়ে অনেককে জীবনও দিতে হয়েছে।’
পদোন্নতি, উন্নত প্রশিক্ষণ, রেশনসহ আনসার ও ভিডিপি বাহিনীতে বিভিন্ন সমস্যা দূর করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উন্নয়নে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪২তম জাতীয় সমাবেশে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এ বাহিনীর ১৬২ জনকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পদক প্রদান করা হয়। সমাবেশে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব পদক তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে আনসার ভিডিপি অ্যাকাডেমিতে ‘মুজিব প্রাঙ্গণ’সহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন।
গাজীপুরের সফিপুর আনসার ভিডিপি অ্যাকাডেমিতে অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আখতার হোসেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামিমসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/টিটি