ফেলানী হত্যার ১৪ বছর: আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার চান মা
ছবি: সংগৃহীত
কিশোরী ফেলানী খাতুন হত্যার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিচার পাননি তার পরিবার। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বাবার সঙ্গে কাটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হন ১৫ বছর বয়সী এই মেয়ে।
আজও তার বাবা-মা ন্যায়বিচারের আশায় অপেক্ষা করছেন, আর ফেলানী হত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করার দাবি তুলেছেন তার মা জাহানারা বেগম।
ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিচার ২০১৩ সালে ভারতের কোচবিহারে বিএসএফের বিশেষ আদালতে শুরু হয়। আদালত প্রথমে অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়। দ্বিতীয়বার পুনর্বিচারের পরেও একই রায় দেওয়া হয়। এরপর ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন করে। তবে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারির পর আর কোনো শুনানি হয়নি। এই দীর্ঘসূত্রিতায় ফেলানীর পরিবার গভীর হতাশায় রয়েছে।
ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম এবং মা জাহানারা বেগম অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ সরকারের অবহেলা ও ভারতের আদালতের দীর্ঘসূত্রিতার কারণেই বিচার হচ্ছে না। তারা শেখ হাসিনার সরকারের পাশাপাশি নতুন সরকারের কাছেও আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এস. এম. আব্রাহাম লিংকনের মতে, ফেলানী হত্যার বিচার শুধু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে না, বরং সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনতেও সহায়ক হবে। সীমান্তে হত্যা বন্ধ এবং সুষ্ঠু বর্ডার ম্যানেজমেন্টের জন্য এই বিচারের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।
আইনজীবী এবং বিশ্লেষকরা মনে করেন, ফেলানী হত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন হওয়া উচিত। এটি বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখতেও ভূমিকা রাখবে।
বিগত বছরগুলোতে ভারত সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও সীমান্তে হত্যার ঘটনা বন্ধ হয়নি। কুড়িগ্রামবাসীসহ সারা দেশের মানুষ দ্রুত ফেলানী হত্যার বিচার এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি তুলেছেন।
ফেলানীর পরিবার ও কুড়িগ্রামের মানুষ আজও এই হত্যার সঠিক বিচার ও সীমান্তে শান্তির প্রত্যাশায় দিন কাটাচ্ছেন। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে এই বিচার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে।