জুলাই-আগস্টের ঘটনায় অনেক বাদী মামলা বাণিজ্য করছেন: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী অভিযোগ করেছেন, জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর মামলার অনেক বাদী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা করে বাণিজ্যের পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি সতর্ক করেছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করা হবে।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) ডিএমপি সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, গণ মামলায় গণ আসামি অন্তর্ভুক্ত করা হবে না এবং অযথা কাউকে হয়রানিও করা হবে না। তিনি জানান, যারা অপরাধে সরাসরি জড়িত নন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা সঠিক ছিল না। সঠিক ভূমিকা পালন করলে এত প্রাণহানি হতো না। মরণাস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।”
মতবিনিময় সভায় কমিশনার বলেন, আন্দোলনের ঘটনায় সাংবাদিকদের যেসব মামলায় আসামি করা হয়েছে, তদন্তে প্রমাণ না পেলে তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে। কোনো বাদী নিজ থেকে কারো নাম বাদ দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না; এটি একমাত্র তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব।
ডিএমপি কমিশনার স্বীকার করেন যে, কিছু পুলিশ সদস্য মামলাকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। “অনেক বাদী পরিকল্পিতভাবে ১৫০-২০০ বা আরও বেশি আসামি করেছেন। প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতা বা বিগত সরকারের শীর্ষ নেতাদের নাম দিয়ে, পরে ঢালাওভাবে ইচ্ছেমতো নাম যুক্ত করেছেন। পুলিশকে বাধ্য করা হয়েছে এসব মামলা নিতে।”
জুলাই-আগস্টের ঘটনার পর পুলিশ নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছিল উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, “৫ আগস্টের পর রাজারবাগের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। খিলগাঁও থানার পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়তে ছুড়তে রাজারবাগে চলে আসে। ওই সময় পুলিশের অভিজ্ঞতা ছিল বিভৎস, যা তারা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি।”
তিনি জানান, ওই সময় পুলিশের অনুপস্থিতে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। খুন, লুটপাট, ছিনতাই, ডাকাতি বেড়ে যায়।
মতবিনিময় সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও ক্র্যাব সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ সংগঠনের কার্যনির্বাহী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।