মিয়ানমার পরিস্থিতিতে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-ভারত
ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমারে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে হাছান মাহমুদের বৈঠকে মিয়ানমারে পরিস্থিতি নিয়ে এ আলোচনা হয়।
জয়শঙ্কর এবং হাছান মাহমুদ প্রথমে একান্ত ও পরে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. হাছান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের পূর্ণ অধিকারসহ তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন এবং মিয়ানমারে চলমান পরিস্থিতি নিয়েও একযোগে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে খোলামেলা ও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দু'দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক যে নতুন উচ্চতায় উঠেছে। সেটিকে আরও ঘনিষ্ঠ ও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সীমান্তে হত্যা নয় সৌহার্দ্য বজায় রাখা, আন্ত:দেশীয় যোগাযোগ বৃদ্ধিতে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরকে ভারতের ব্যবহারের কার্যকর সূচনা, বিদ্যুৎ শক্তির উৎসজনিত সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব স্মিতা পান্ট উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিপক্ষীয় সফরে প্রথম বিদেশ সফরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে আজ সকালে দিল্লি যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন সকালে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দিল্লিতে জয়শঙ্কর-হাছানের বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুই দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক তৈরি করার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ, তিস্তা ও গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য, কানেকটিভিটি, বিদ্যুৎ-প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। উপ-আঞ্চলিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় সহযোগিতা করার বিষয়ে উভয় মন্ত্রী একমত হয়েছেন।
রমজান মাসসহ অন্যান্য সময়ে বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য যেন স্থিতিশীল থাকে সেজন্য ভারত থেকে নিরবচ্ছিন্ন পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানান হাছান মাহমুদ। একইসঙ্গে বাংলাদেশি বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করার জন্য অনুরোধ করেন মন্ত্রী।
তিস্তা চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করার ওপর জোর দেন হাছান মাহমুদ। এছাড়া গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে এবং এর নবায়নের ওপর জোর দেন তিনি।
ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) হাতে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয় এবং উভয় দেশ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষযে একমত হয়। এছাড়া সীমান্তে প্রাণঘাতি নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার নিয়েও আলোচনা হয় যেন সীমান্ত হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা যায়।