পপুলার লাইফের সাবেক চেয়ারম্যানের মৃত্যু ঘিরে রহস্য
পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান হাসান আহমেদের (৫৬) মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আদালতের নির্দেশে পল্টন থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে ঢামেক হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য শেষে তার আত্নীয়-স্বজনদের কাছে হস্তান্ত করা হয়েছে বলে মর্গ সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মরদেহ থেকে বিভিন্ন ধরনে আলামত সংগ্রহ করা হয়। সেগুলো রায়সানিক ও হিস্টো প্যাথলজি পরীক্ষা জন্য পাঠানো হবে। পরীক্ষার প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যু সঠিক কারণ জানা যাবে।
এদিকে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন মিয়া। তিনি জানান, হাসান আহমেদ পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। পরিবারকে নিয়ে থাকতেন পল্টন বক্স কালভার্ট রোড রূপায়ন তাজ ভবনের ১৪ তলায়।পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তিনি হৃদরোগে ভুগছিলেন। সোমবার সন্ধ্যার পর ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে তিনি মারা যান।
তিনি আরও জানান, হাসান আহমেদের ভাইরা একটা অভিযোগ করেছেন, তার প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে তার মরদেহ পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি জানান, হাসান আহমেদের স্বজনদের পক্ষ থেকে আদালতে একটি মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। সেই অনুযায়ী একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। হাসান আহমেদের মৃত্যু নিয়ে তার শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সন্দেহ করা হচ্ছে।
এদিকে হাসান আহমেদের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি জানান, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন হাসান। প্রতিষ্ঠানটিতে তার ৬০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। রাজধানীতে কয়েকটি আবাসিক ভবনও রয়েছে তার। এসব তার পৈত্রিক সম্পত্তি। তিনি জানান, ২০২০ সালে তিনি স্ট্রোক করে দীর্ঘদিন স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এরপর তার বাম হাত ও পা প্যারালাইজড হয়ে যায়। তখন থেকেই সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য তার ছোট তিন ভাই ষড়যন্ত্র শুরু করে। আদালতে একাধিক মামলাও হয়। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বাসায় আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার দুপুরে তার জানাজা পড়ানোর কথা ছিল। এর আগে পুলিশ বাসায় এসে জানায়, তার ছোট ভাই কবির আহমেদ মামলা করেছেন, মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে হবে।
অপরদিকে পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিপুল হোসন সুরতহালে রিপোর্টে উল্লেখ করেন, তার শরীরে পুরানো ঘায়ের দাগ রয়েছে। এছাড়া কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে তিনি উল্লেখ করেন, মৃত হাসান আহমেদের পরিবার অভিযোগ করেন, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এএইচ/