প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধ করতে চেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধ করতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে।
বৃহস্পতিবার (১২জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান।
সরকার দলীয় সদস্য দিদারুল আলমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০১৩ সালে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াতে বসবাসরত বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশিদের বৈধ করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবদান রেখেছে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে সৌদি সরকার অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকদের ইকামা পরিবর্তন করে বৈধ করার যে সুযোগ দিয়েছে, তা সবচেয়ে বড় সুযোগ।
এই প্রক্রিয়ায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশিকে বৈধ করা সম্ভব হয়েছে। তা ছাড়া, মালয়েশিয়া একবারে প্রায় দুই লাখ ৬৮ হাজার অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিক বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। যা আমাদের দূতাবাস ও সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে সম্ভব হয়েছে। তা ছাড়া, ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে যখনই বৈধকরণের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, সে জন্য কান্ট্রি অব অরিজিন (জাতীয় পরিচয়) থেকে বাংলাদেশের যে ধরনের কাগজপত্র সংশোধন বা ইস্যু করা এবং সত্যায়ন প্রয়োজন হচ্ছে, আমাদের দূতাবাস তা দিয়ে আসছে।
তা ছাড়া, ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই সরকার আমাদের সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় শ্রমিকদের বৈধকরার জন্য অ্যামনেস্টি বা সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দূতাবাস অনিয়মিত শ্রমিকদের জন্য পাসপোর্ট নবায়ন, জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট, বিভিন্ন সত্যায়ন প্রভৃতি সেবা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেয়। ফলে নির্দিষ্ট স্বল্প সময়ের মধ্যে ৫০ হাজার শ্রমিককে বৈধ করা সম্ভব হয়।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানান, বাহরাইনে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধ করার লক্ষ্যে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমার আওতায় প্রায় ৩৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মী বাহরাইনে বৈধ হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আগে বাহরাইনে অবৈধ কর্মীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৮ হাজার।
আব্দুল মোমেন জানান, বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের বৈধকরণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়। তা ছাড়া, আর্থ-সামাজিকসহ ওই দেশের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ নীতি-নির্ধারণী বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ থেকে বাংলাদেশ সরকার সবসময় বিরত থাকে।
তবে যেসব দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি অবৈধভাবে বসবাস করছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন, সেসব দেশে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। যাতে সুযোগ এলেই বাংলাদেশিরা বৈধভাবে বসবাসের অনুমোদন পেতে পারেন। এই লক্ষ্যে, সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়মকানুন অনুসরণপূর্বক অবৈধ বাংলাদেশিদের বৈধ করার স্বার্থে যে ধরনের কাগজপত্র, প্রমাণ দাখিল করার নির্দেশ আসে, আমাদের দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সেসব কাগজপত্র দেওয়া হয়।
এনএইচবি/এমএমএ/
