পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ

করোনা মহামারি, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সব মিলিয়ে অনেকটা বিষাদেই কাটছিল মানুষের জীবন। তবে সব দুঃখ-গ্লানি ও হতাশা পেছনে ফেলে শান্তিপূর্ণ জীবনের প্রত্যাশায় নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করেছে বিশ্ববাসী। সেই আনন্দে অংশ নিয়েছেন দেশবাসীও। রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে বছর বরণে নানা আয়োজন চলে। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ফানুস উড়ানো আর আতশবাজির শব্দ উঠেছে মুহুর্মুহু।
পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ শুধু আতশবাজি আর ফানুশ উড়ানোর মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়! বাসা-বাড়ি ছাদে প্রতিবেশীরা মেতে উঠেছেন ভুরিভোজে। পরিবারের ছোট সদস্য থেকে শুরু করে, বড় পর্যন্ত সবাই মেতে উঠেছেন পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার আনন্দে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বহিরাগতদের প্রবেশ না থাকায় শিক্ষার্থীরা আনন্দে মেতে উঠেছে। গান গেয়ে, হাসি-ঠাট্টা আর মোবাইলে ছবি তুলে নতুন বছরকে বরণ করার উন্মাদনায় মেতে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এদিকে হলগুলোতেও মিষ্টান্নের আয়োজন করেছে হল প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শাকিল-আস সাদ বলেন, করোনার ধকল সামলে ওঠার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পড়েছে জনজীবনে। আগামী দিনের প্রত্যাশা বিশ্বজুড়ে সর্বত্র শান্তি বিরাজ করুক। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ হয়ে উঠুক সারা বিশ্বের কাছে এক অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় স্মার্ট বাংলাদেশ।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের নাহিদ ইসলাম বলেন, বিশ্বের সামনে বাংলাদেশ এভাবে মাথা উঁচু করে চলতে পারে, সেই প্রত্যাশাই থাকবে। সেই সঙ্গে দেশকে ষড়যন্ত্রের মুখে ফেলতে যারা কূটবুদ্ধিতে মত্ত থাকে, তাদেরও যেন শুভ বুদ্ধির উদয় ঘটে সেই কামনা রাখি।
এদিকে রাজধানী ঢাকাতে নতুন বছর বরণকে সামনে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সরেজমিনে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সন্ধ্যা ৬টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
রাত ১২টার দিকে পরিদর্শনে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা। উপাচার্য বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা খুবই সুশৃঙ্খলভাবে নববর্ষ উদযাপন করছে। বহিরাগতরা এলে অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তাই আমরা এটি রোধ করেছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থী, আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে এবং নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও গুলশান-বনানী-বারিধারা এলাকায় রাত ৮টা থেকে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। রাত ৮টার পর থেকে ওই এলাকায় প্রবেশ ছিল নিয়ন্ত্রিত।
তবে আতশবাজি, পটকা ফোটানো কিংবা ফানুস ওড়াতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানার বালাই ছিল না।
এসএন
