চাকরিক্ষেত্র ও শিক্ষার্থীদের জন্য হচ্ছে ডোপ টেস্ট আইন
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক. ম. মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, সরকার সব ধরণের সরকারি চাকরিতে ডোপ টেস্ট নিশ্চিত করতে এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় ডোপ টেস্ট আইনের খসড়া তৈরি করছে। এটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃংখলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে একথা জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।
তিনি বলেন, সরকারি চাকরি বলতে পিওন থেকে কর্মচারী, কর্মকর্তা সবাইকে ডোপ টেস্ট করতে হবে। শুধু তাই না, আমরা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছি। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীরা যখন দেখতে পাবে যে, তাদের জীবনের কর্মক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট লাগবে তাহলে হয়তো তারা এসব পথ থেকে সরে আসবে।
তিনি বলেন, সবক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করতেই আইন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মোজাম্মেল হক জানান, মাদক (ড্রাগ) এবং অ্যালকোহল এক জিনিষ নয়। অনেক সময় আমরা এই দুটিকে এক করে ফেলি। অ্যলকোহল হচ্ছে মদ। আর ড্রাগ বা মাদক হচ্ছে এমন এক জিনিষ যা মানুষের জীবনী শক্তি ধ্বংস করে দেয়। ড্রাগের জন্য যে কঠোর আইন গুলো আছে সেটা যেন যথাযথ প্রয়োগ হয় সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, একই সঙ্গে অ্যালকোহল ও মাদকের (ড্রাগ) পার্থক্য বুঝানোর জন্য আমরা সচেতনতা তৈরি করতে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনে পর্যায়ে মাদক বিরোধী কমিটি গঠন করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে মানুষকে সচেতন করা, মোটিভেট করার কথা বলা হয়েছে। আর যারা মাদক ব্যবসায়ী, মাদক বিক্রেতা, মাদকসেবী তাদের বিরুদ্ধে আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। এরা সহজে জামিন পেয়ে যায়। সেক্ষেত্রে আইনের দুর্বলতার কারণে, আইন সহজ থাকার কারণে তারা সহজে জামিন পেয়ে যায়। এ নিয়ে আইনশৃংখলা বাহিনী উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ জন্য আজকের সভায় আইনের দুর্বলতা ও ত্রুটিগুলো কিভাবে দূর করা যায়, আইন সংশোধন করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারি রোহিঙ্গাদেরকে কিভাবে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ থেকে নিবৃত করা যায় সে জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে আইনশৃংখলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যোগ করেন আইনশৃংখলা কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।
তিনি আরও জানান, মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার জন্য পৃথক একটা হাসপাতাল করার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে আইনশৃংখলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি উদ্ধারকৃত মাদক যথাযথভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে কি না- সেটা নিশ্চিত করতে এবং রেকর্ড রাখার জন্য উদ্ধার হওয়া মাদকের স্থির চিত্র ও ভিডিও চিত্র ধারণ করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। পত্রিপত্রিকার মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে আমরা জানতে পারি যে,যেগুলো বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা হয়, সেগুলো ঠিকমত ধ্বংস করা হয় না বা খালি বোতল ধ্বংস করা হয়। সে জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এনএইচবি/এএস