যুদ্ধাপরাধী-খুনিদের প্রেতাত্মারা বিদেশে নালিশ করছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা এই দেশের স্বাধীনতা চায়নি। যারা খুনিদের নিয়ে এবং যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে সরকার গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের উন্নয়নকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে চেয়েছিল। তাদের কিছু প্রেতাত্মা এখনও সমাজে আছে, রাজনৈতিক অঙ্গনে আছে। তারাই এগুলো করে বেড়াচ্ছে। শুধু এখানেই না, বিদেশের কাছে নালিশ করে বেড়াচ্ছে তাদের কাছে তথ্য দিচ্ছে বলে।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যেসমস্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, এদেশে সাজা হয়েছে তাদের ছেলে-মেয়ে যারা পালিয়ে গেছে। আর একজন এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে জেলে, দয়া করে আমরা তাকে বাসায় থাকতে দিয়েছি। বাংলাদেশের সব থেকে বড় এবং সব থেকে ব্যয়বহুল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। আর তার ছেলে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা এবং দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ফিউজিটিভ হয়ে গেছে। বিদেশে পালিয়ে রয়েছে। কিন্তু তার ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।
সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা উন্নয়ন দেখেন না। সব সময় আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেন। তারা নিজেরা আয়নায় একটু চেহারা দেখেন। আর অতীতে কি করেছেন সেটা দেখেন। যাদের জন্য মায়া কান্না, একজন হচ্ছে দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত আর একজন খুনি। একুশে আগাস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল, আইভী রহমানের হত্যাকারী। সেই হত্যাকারীরা আজকে সব থেকে বেশি সোচ্চার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধীর নিয়ে অতীতে যারা ছিনিমিনি খেলেছে, তারা তাদের শাস্তি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমতা থেকে হটিয়েছে।
তিনি বলেন, যারা এই দেশে খুনের রাজত্ব করেছিল, যুদ্ধাপরাধীদের রাজস্ব করেছিল, দুর্নীতির রাজত্ব করেছিল, তাদের স্থান বাংলার মাটিতে হবে না। জনগণের অধিকার নিয়ে আমরা কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল বলে উন্নয়নের রোল মোডেল, আর আমাদের দেশের কিছু লোক আছে তারা তো ঘেউ ঘেউ করেই যাচ্ছে। এই ঘেউ ঘেউ করতে থাকুক, এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। দেশের উন্নয়ন হয়েছে বলে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। স্যাটালাইট-১ উৎক্ষেপন করেছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে বদনাম করে বেড়াচ্ছে দেশে বিদেশে। এটা আর একটি বিষয়।
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে বলেন, যারা নির্বাচন নিয়ে এত কথা বলেন তারা ভুলে যান কেন? ২০০১ সালে ১ অক্টোবরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জোর করে হারানো জন্য যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা হয়েছিল মনে আছে? যারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা ভুলে যান কেন? আমি নিজে বড়গুনায় নির্বাচন করি ওই এলাকার ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে সেনাবাহিনীর জিপে বেঁধে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুঁড়ানো হয়। পিটিয়ে ঘর ছাড়া হয়। এগুলো ভুলে গেছেন? একের পর হত্যা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ৫ বার বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে। তারা দুর্নীতিগ্রস্থ। শত শত কোটি পাচার করেছে। ২০০১ সাল থেকে কি পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে? যারা ঋণ খেলাপীর কথা বলেন তাদের বলব জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পরে এলিট শ্রেণি তৈরি করার জন্য যে ঋল খেলাপী তৈরি করার সংস্কৃতি এদেশে শুরু করে গেছে সেই খবর নিয়ে নেন। আওয়ামী লীগ ভাল কাজ করলেই তাদের বিরুদ্ধে লেগে থাকা। এটা এক শ্রেণির মানুষের অভ্যাস।
তিনি বলেন, এক শ্রেণির লোক আছে যারা বলেন উন্নয়নে নাকি হাজার হাজার কোটি ধ্বংস হয়েছে। যদি ধ্বংসই হয়ে থাকে তাহলে আজকে সারা বাংলাদেশে মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ পাচ্ছে কিভাবে? যদি অর্থ ব্যয়ই না হবে এতো কাজ হয় কিভাবে? এগুলো যারা দেখেন না তাদের চোখে ঠুলি পড়া, খুনিদের ঠুলি পড়া, যুদ্ধাপরাধীদের ঠুলি পড়া। এরা দেশের উন্নয়ন দেখে না। লুটেপুটে খেতে পারছে না এটাই তাদের সমস্যা। তারা গরীবের হাড্ডিসার, কঙ্কালসার দেখিয়ে দেখিয়ে বিদেশ থেকে এনে খাবে আর লুটপাপট করে খাবে এটাই তাদের কাজ।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জাতির পিতা এই সংগঠন নিজে হাতে গড়ে দিয়ে গেছেন। অনেক ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করে আমরা এই সংগঠনকে আবার সুসংগঠিত করেছি। একামত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হবে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা নিয়ে চলে, মাথা উঁচু করে চলে।
এসএম/