বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী
‘অন্যদেশের সৈন্য সরাতে বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দেন এডওয়ার্ড হিথ’

স্বীকৃতির জন্য বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশের সৈন্য সরাতে বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ৮ জানুয়ারি লন্ডনে বৈঠককালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এই পরামর্শ দেন।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন একথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে যখন লন্ডনে যান তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ লন্ডনের বাইরে ছিলেন। তিনি শোনামাত্র ছুটি বাতিল করে ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে চলে আসেন। বঙ্গবন্ধুকে আমন্ত্রণ জাানান। বঙ্গবন্ধু যখন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে আসেন তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে বঙ্গবন্ধুর গাড়ির দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাকেন বঙ্গবন্ধু গাড়ি থেকে না নামা পর্যন্ত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ডাউনিং স্ট্রিটে এডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে বৈঠক করেন বঙ্গবন্ধু। সদস্য স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতির বিষয়টা বৈঠকে ওঠে। তখন এডওয়ার্ড হিথ বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দেন স্বীকৃতি পাওয়া সহজ হবে যদি বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশের সেনাবাহিনী সরিয়ে নেওয়া হয়।
বঙ্গবন্ধু সেভাবেই পরবর্তীতে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের স্বীকৃতি লাভে সক্ষম হয়েছিলাম। জাতিসংঘেরও সদস্যপদ পেয়েছিলাম অল্প সময়েই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু লন্ডন থেকে দিল্লি যান। সেখানে গেলে দিল্লির জনগণ তাকে অভূতপূর্ব অভ্যর্থনা জানায়। বিমানবন্দরে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বরাহগিরি ভেঙ্কট গিরি ও প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানান। বঙ্গবন্ধু তখন বলেন, ঢাকা যাওয়ার পথে দিল্লিতে যাত্রাবিরতি করেছি কারণ বাংলাদেশের জনগণ ভারতকে অকৃত্রিম বন্ধু মনে করে।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। সম্মানিত বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল আলী।
বিভিন্ন দেশে দায়িত্বপালনকারী বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূতগন এবং বিদেশে বাংলাদেশের মিশন প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর আসাদ আলম সিয়াম ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আরইউ/এএস
