মানুষের ভাগ্য গড়াই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

জাতির পিতা যে মানুষগুলোর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন সেই মানুষগুলোর ভাগ্য গড়াই আমাদের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একটাই, যে আদর্শের জন্য তিনি দেশ স্বাধীন করেছেন, যে লক্ষ্য নিয়ে সারাজীবন লড়াই সংগ্রাম করেছেন, জেল জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন বার বার, নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। যে মানুষগুলোর জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন সেই মানুষগুলোর ভাগ্য গড়া আমাদের লক্ষ্য।’
সোমবার (১০ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
বাবার সেই সময়ের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেদিন জাতির পিতা দেশে ফিরে আসলেন সেদিন কারো কথা না ভেবে তিনি সোজা চলে গেলেন প্রিয় জনতার কাছে। যে জনগণের জন্য তিনি তার জীবনটা উৎসর্গ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা ১০ জানুয়ারির ভাষণ। সেই ভাষণটা ছিল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা। ভাষণটা ছিল স্বাধীন রাষ্ট্র কাঠামো কি রকম হবে, স্বাধীন রাষ্ট্র কিভাবে চলবে, স্বাধীন রাষ্ট্রকে কিভাবে কোন আদর্শে চলবে সেই আদর্শই তিনি এই ভাষণে দিয়েছিলেন।
‘একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা তার এই ভাষণে আমরা পেয়েছি। স্বাধীন বাংলাদেশ কি আদর্শ নিয়ে গড়ে উঠবে। অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা, দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন সেদিনের ভাষণে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, পাকিস্তানি কারাগারে কি অত্যাচার, নির্যাতন করা হয়েছে আমরা কিন্তু জানতে পারিনি। বার বার জিজ্ঞাসা করেও জানতে পারিনি। রেহানা বার বার জিজ্ঞেস করত তাই ওকে বলেছিল আমি বলতে চাই না, তোরা সহ্য করতে পারবি না। আমরা সে কথা থেকেই বুঝতে পারি কী নির্যাতন করা হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, সেদিন জাতির পিতা স্বদেশে ফিরে এসেছিলেন। আসাটা আমাদের জন্য কতটা প্রয়োজনীয় ছিল, কারণ এই বাংলাদেশ তিনি স্বাধীন করেছিলেন। তার যে স্বপ্ন, বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলা। মাত্র সাড়ে তিন বছরের সময় পেয়েছিলেন। তিনি ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে তৃণমূলের মানুষের একেবারে গ্রামের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোটের অধিকার, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন, তাদের ক্ষমতায়ন করতে চেয়েছিলেন্ গ্রামের মানুষ, তৃণমূলের মানুষ, তাদের ক্ষমতায়নের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তখনই কিন্তু ১৫ আগস্টের আঘাতটা আসে। এই আঘাতটা শুধু একজন রাষ্ট্রপতিকে হত্যা না। এই আঘাতটা ছিল একটা স্বাধীন দেশের আদর্শকে হত্যা করা। চেতনাকে হত্যা করা। সেটাই আপনারা দেখতে পান।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা এভাবেই রাষ্ট্রটা চালিয়েছিল। ১৫ আগস্টের খুনি, স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী তারাই ক্ষমতায় বসেছিল। মানুষের ভাগ্য কিন্তু পরিবর্তন করার কোনো চেষ্টা তারা করেনি। আমাদের লক্ষ্য একটাই যে আদর্শের জন্য তিনি দেশ স্বাধীন করেছেন। যে লক্ষ্য নিয়ে সারাজীবন লড়াই সংগ্রাম করেছেন জেল জুলুম অত্যাচার বার বার সহ্য করেছেন নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। যে মানুষগুলোর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন সেই মানুষগুলোর ভাগ্য গড়া এটাই আমাদের কাম্য।
এসএম/এমএমএ/
