‘রিজার্ভ নিয়ে বসে না থেকে জনগণের ভোগান্তি কমাতে হবে’

রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং এ নিয়ে সমালোচকদের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রিজার্ভের টাকা নিয়ে অলস বসে থাকা ঠিক হবে না। আমাদের জনগণের ভোগান্তি কমাতে হবে।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে (বিআইসিসি) জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের শপথবাক্য পাঠ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অথিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের ৬২৩ জন সদস্য শপথ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হঠাৎ একটা কথা এসেছে রিজার্ভের টাকা নাকি নাই, চুরি হয়ে গেছে। এই চুরি কীভাবে সম্ভব উল্লেখ করে বিএনপি আমল এবং বর্তমানের রিজার্ভের তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকা খরচ হয়েছে মানুষের কল্যাণে, তাদের প্রয়োজন মেটাতে।
সরকারপ্রধান বলেন, একুশ বছর পর ক্ষমতায় এসে তার সরকার রিজার্ভ পেয়েছিল প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলারের মতো, যেটাকে বাড়িয়ে তার সরকার প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করে। আর ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে রিজার্ভ যেটা ৫ বিলিয়ন ডলার পেয়েছিল সেটাকে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করে।
তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকা সবসময় খরচ হতে থাকে, এটা রোলিং করে। কিন্তু করোনার সময় আমদানি, রপ্তানি, যোগাযোগ, যাতায়াত সবকিছু একরকম বন্ধ ছিল বলেই রিজার্ভ এতটা জমা পড়েছিল। কিন্তু করোনা শেষ হয়ে গেলে আমদানি-রপ্তানি এমনকি চাষবাষের জন্য মেশিনারিজ ক্রয়ে টাকা ব্যয় করতে হয়। করোনার ভ্যাকসিন ক্রয় এবং বিনামূল্যে টেস্ট করাসহ আনুসাঙ্গিক খাতেও অর্থ ব্যয় করতে হয়। এভাবেই এ টাকা ব্যবহার হয়েছে মানুষের কল্যাণে।
নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনকল্যাণমূলক স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই এবং তার মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন যেন নিশ্চিত হয় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। এখানে আপনাদের একটা বিরাট দায়িত্ব রয়েছে। এলাকায় কী ধরনের অসুবিধা আছে, মানুষের জন্য কী কল্যাণকর কাজ করা যেতে পারে, উন্নয়নের জন্য কী কাজ করতে পারেন সেটা আপনাদের ভাবতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র রয়েছে, অনেক দল রয়েছে। কেউ দল থেকে বা কেউ আলাদাভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে যখন আপনি ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তখন আপনার দায়িত্ব সবার জন্য।
শেখ হাসিনা নিজের উদাহারণ টেনে বলেন, তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কে তাকে ভোট দিল আর কোন এলাকার ভোটার সেটা দেখেননি। তিনি বলেন, আমি সার্বিকভাবে উন্নয়নের ব্যবস্থা নিয়েছি, প্রতিটি মানুষ যাতে উন্নয়নের ছোঁয়া পায় সেই ব্যবস্থাই আমরা নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৬১টি জেলা পরিষদে ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব খাতের আওতায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা এবং এডিপির আওতায় ৫৪০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছি।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জেলা পরিষদের নির্বাচিত এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিক মুহাম্মদ ইবরাহিম অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
সূত্র: বাসস
এসজি
