বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন, বিদেশি ব্যবসায়ীদেরকে প্রধানমন্ত্রী

বিনিয়োগ ও সোর্সিংয়ের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিতে বিদেশি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছি। এরফলে বাংলাদেশ বিশ্বে এখন বিনিয়োগ এবং সোর্সিং-এর জন্য সর্বাধিক অনুকূল গন্তব্য হয়ে উঠেছে। দেশের বিনিয়োগবান্ধব নীতি একইসঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটা-মুক্ত সুবিধা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করছে।’
রবিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) আয়োজিত ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক-২০২২’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে আমি দেশের ব্যবসায়ী নেতাদেরকে অনুরোধ করছি। আপনারা তাদের প্রযুক্তি, জ্ঞান আপনাদের শিল্প খাতে গ্রহণ করুন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণই আমাদের সাহসের উৎস। জনগণের আর্থসামাজিক উন্নতি হচ্ছে এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার এখন মাথাপিছু আয়। ক্রয় ক্ষমতাও এদেশের মানুষের বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের নিজস্ব বাজার তৈরি হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, শুধু রপ্তানি করলেই চলবে না, নিজের দেশের ভেতরেও বাজার সৃষ্টি করতে হবে এবং করোনাকালীন তার সরকার যতটা সম্ভব তৃণমূলে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া ও সরবরাহ করা যায় সেটা করেছে। এরফলে মানুষের ভেতর হাহাকার আসেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পদধ্বনি শুনছি আমরা। যারা শ্রম দেয় তারা আমার বাংলাদেশেরই মানুষ তাদেরকে আমরা আরো উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলতে চাই । কারণ, এখন বিজ্ঞানের কারণে প্রযুক্তির নতুন নতুন আবির্ভাবে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি তৈরি পোশাক রপ্তানীকারকদের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কাপড়ের গুণগত মান বৃদ্ধি এবং শ্রম বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার আহবান জানান।
ধানমন্ত্রী বলেন, তার রাজনীতিই হচ্ছে এদেশের কৃষক, শ্রমিক ও মেহেনতি মানুষের জন্য। তাদের কল্যাণই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আমাদের যে বিপুল শ্রমশক্তি রয়েছে তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং মেধা কাজে লাগানোরও ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পুনরায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের সাড়ে ১৬ কোটির উপরে মানুষ এবং তাদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে হবে। কিন্তু আমরা কারও কাছে ভিক্ষা করে চলতে চাই না। নিজের খাদ্য উৎপাদন নিজে করব। সেজন্য ফসলি জমি রক্ষা করা, যততত্র শিল্প গড়ে না তোলা এবং পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে তোলার ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) হল অফ ফেম-এ ‘কেয়ার ফর ফ্যাশন’ থিম নিয়ে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানটি শুরু হয়েছে। ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত এটি চলবে।
‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ এর প্রচার করাই এই ইভেন্টের মূল উদ্দেশ্য কারণ। বিজিএমইএ তার মার্কেট শেয়ার ধরে রাখতে এবং বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশী পোশাকের মার্কেট শেয়ার বাড়াতে চায়।
সপ্তাহব্যাপী এই মেগা ইভেন্ট গ্লোবাল ভ্যালু চেইনের অংশীদারদের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ তৈরি করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দুটি কফি টেবিল বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করেন, যার উপর বিজিএমইএ চলতি বছরের শুরু থেকে কাজ করছে।
পোশাক রপ্তানীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৪ জন তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারককে বিশেষ সম্মাননাও প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশন (আইএএইফ) সভাপতি সেম অলটান এবং বিজিএমইএ সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মান্নান কচি বক্তৃতা করেন। বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
এমএমএ/
