বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন
দুর্যোগে ক্ষতি মেটাতে পৃথক বরাদ্দ দাবি তথ্যমন্ত্রীর

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে দেশের পানি ও পয়-নিষ্কাশন অবকাঠামোর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতি মেটাতে বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে পৃথকভাবে অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মিশরে শারম আল শেখ শহরে চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে মূল সম্মেলনের পাশাপাশি স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটার এইড আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পানি ও পয়-নিষ্কাশন অবকাঠামোর দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতির ওপর আলোকপাত’ শীর্ষক সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ এ দাবি তুলে ধরেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে পানি ও পয়-নিষ্কাশনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির এ বিষয়টি প্রথমে অনেকে স্বীকারই করতে চায়নি। অথচ বাংলাদেশসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা অনেক দেশের জনজীবনে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। পরিবেশ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ থেকে অর্থায়ন নয়, এই ক্ষয়ক্ষতি পূরণ ও নিরসনের জন্য আলাদা খাত তৈরি করে পৃথকভাবে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।’
কপ২৭-এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত আশাপ্রদ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সবাই এখানে ভালো ভালো কথা বলছি, কিন্তু যুদ্ধ যদি বন্ধ না হয় তাহলে জলবায়ু অর্থায়নের কী হবে! অর্থাৎ আমরা যদি সত্যিই পৃথিবীকে রক্ষা করতে চাই, তবে অবিলম্বে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে।’
বাংলাদেশের পানি সরবরাহ ও পয়-নিষ্কাশনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাবের মধ্যে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা ও পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অসময়ে বৃষ্টিপাত, খরা ও উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত জলের হানা বেড়ে যাওয়া, নদীতীর ক্ষয়, ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের প্রকোপ, শহরাঞ্চল ও জলাধার সন্নিকট এলাকায় চকিত বন্যায় সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরেন বেলজিয়ামের লিম্বুর্গ ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাম থেকে পরিবেশ রসায়ন গবেষণায় ডক্টরেট হাছান মাহমুদ।
দেশে গত ১৫ বছরের ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ২০০৭ সালের সিডরে ২.৩১ বিলিয়ন ডলার, ২০০৯ সালের আইলায় ১ বিলিয়ন, ২০১৬ সালে রোয়ানু’তে ১২৭ মিলিয়ন, ২০১৯ সালে ফানি’তে ৬৩.৬ মিলিয়ন, ২০২০ সালে আম্পানে ১৩ মিলিয়ন, ২০২১ সালে ইয়াসে খুলনাতে ৭ লাখ ডলারসহ ২০২২ সালের অশনি ও বিভিন্ন সময়ে বন্যা ও অন্যান্য দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক বিবরণ তুলে ধরেন বক্তারা।
ওয়াটার এইডের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি পরিবেশবিদ সেলিম উল হক, জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ কলিন ম্যাককুইস্টান, পরিবেশ গবেষক মো. শামস-উদ-দোহা, ওয়াটার এইড বাংলাদেশ'র পরিচালক পার্থ হাফেজ শাইখ এবং সিনিয়র এডভোকেসি অফিসার আদনান কাদের বক্তব্য দেন।
এনএইচবি/এমএমএ/
