ফারদিন হত্যা: বান্ধবীর ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে ধোঁয়াশা!

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ (২৪) হত্যাকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা রকম কথাবার্তা ছড়াচ্ছে।
পরশ হত্যা মামলায় তার বান্ধবী অন্যতম আসামি আমাতুল্লাহ বুশরা গ্রেপ্তারের পর ফেসবুকে বিভিন্ন কথা ছড়াচ্ছেন একাধিকজন। ফলে এ নিয়ে নানামহলে চলছে আলোচনা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বুশরাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান রিমান্ডের আদেশ মঞ্জুর করেন।
বুশরাকে গ্রেপ্তারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফারদিনের এক বান্ধবী। যা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। হালিমাতুজ সাদিয়া রোজা নামে ওই বান্ধবীর ফেসবুক আইডি থেকে দাবি করা হয়, ফারদিন নূরের সম্পর্ক আরিশা আশরাফের সঙ্গে। তাহলে আমাতুল্লাহ বুশরা কে? দাবি করা ব্যক্তিটি ফারদিন ও আরিশা আশরাফকে মেনশন করে একটা স্ট্যাটাস লিখেন—
“Fardin Noor was in a relationship with Arisha Ashraf. Then who is Amatullah Bushra, police arrested?”
ওই ফেসবুক পোস্টের কমেন্ট বক্সে মুমতাহিমা বিনতে মোস্তাফিজ লিখেছেন, “I was thinking the same!”
নাজিফা জয়া নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘দুইটাই আলাদা মেয়ে। সম্ভবত ত্রিকোণ প্রেম থেকে এই ঘটনা।’
এদিকে ঘণ্টাখানেক পর হালিমাতুজ সাদিয়া রোজা নামে ওই ব্যক্তি স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলেন। তবে স্ট্যাটাসটি মুছে ফেললেও তার একটি স্ক্রিনশট ঢাকাপ্রকাশ-এর হাতে এসেছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আরিশা আশরাফের দাবি ফারদিন নূরের কোনো প্রেমিকা ছিল না। দেশের একটি অন্যতম টেলিভিশন চ্যানেল তাদের সংবাদে তার (আরিশা আশরাফ) ছবি ব্যবহার করাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিব্রত প্রকাশ করেছেন। যেখানে আরিশা বলেছেন ফারদিন তাকে ওইদিন ড্রপ করেনি; এ কথাসহ ওই টেলিভিশন সম্পর্কে কিছু লেখার পর যেভাবে স্ট্যাটাসটি লিখেছেন—
‘...ফারদিন নুরের কোনো প্রেমিকা ছিল না। না আমি আর না বুশরা আমরা কেউই তার প্রেমিকা ছিলাম না। আমার ব্যাপারটা আমি পরের পোস্টে ক্লিয়ার করব, আগে বুশরারটা বলি। ফারদিন নুর যখন নিখোঁজ ছিল, তখন তার ল্যাপটপটা পুলিশ সিজ করার আগে তার ভাইয়েরা বুশরার সঙ্গে তার ম্যাসেঞ্জার কথোপকথন সম্পূর্ণ পড়েছে। যেখানে এমন কিছুই পাওয়া যায়নি যেটা বিন্দুমাত্র আপত্তিকর। সে আর ১০টা ছেলের মতো ছিলই না। এসব কখনোই তাকে স্পর্শ করতে পারে না। এইজন্য তাকে রোবট নামে ডাকা হতো।...’
ওই স্ট্যাটাসে আরিশা আশরাফ ফারদিনের সম্পর্কের বিষয়ে লেখেন, ‘আমার সঙ্গে ভাইয়ার কি সম্পর্ক সেটা আমি নেক্সট পোস্টে জানাব।’
উল্লেখ্য, সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর বনানি ঘাট থেকে নিখোঁজ বুয়েট শিক্ষার্থীর ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। তার মাথায় ও বুকে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যাওয়াতে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় তাকে হত্যা করা হয়েছে।
গত ৪ নভেম্বর রাজধানীর ডেমরা থেকে নিখোঁজ হন বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন। পরদিন তার বাবা নূরউদ্দিন রানা রাজধানীর রামপুরা থানায় একটি জিডি করেন। পরে সন্তানের খোঁজ চেয়ে ফেসবুকে একটি পোস্টও করেন নূর উদ্দিন রানা।
সেখানে তিনি বলেন, ফারদিন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। শুক্রবার রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে তাকে শেষবার রামপুরা ব্রিজ এলাকায় দেখা যায়। ওইদিন রাত পৌনে ১১ থেকে ১১টার মধ্যে ফারদিন সেখানে অবস্থান করছিলেন। এরপর তার বুয়েটের হল কিংবা বাসায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সে ফেরেনি।
বুধবার (৯ নভেম্বর) রাতে হত্যা এবং লাশ গুমের অভিযোগ এনে ফারদিন নূরের বান্ধবীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে রাজধানীর রামপুরা থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন ফারদিনের পিতা কাজী নূর উদ্দিন রানা।
এনএইচবি/এমএমএ/
