আন্দোলনের হুমকি সরকারি কর্মচারী ঐক্য পরিষদের
নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষে পে-কমিশন গঠন, অন্তবর্তী সময়ের জন্য ৫০ শতাংশ মহার্ঘভাতা প্রদানসহ ৭ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ।
১৫ অক্টোবরের মধ্যে দাবি আদার না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন সরকারি কর্মচারী নেতারা।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তরে সাত দফা দাবিতে সভা করেছে সংগঠনটি।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের কার্যকারী সভাপতি মো. মোজহারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি ফরিদ আহমেদ সরদার, ১১-২০ গ্রেড কর্মচারী অধিকার আদায় ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান, বাংলাদেশ সমাজসেবা কর্মচারী সমিতির সাংগঠনিক সচিব মো. আতাউর রহমান প্রমুখ।
এ সময় সভায় বক্তারা বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি, সন্তানদের লেখা পড়ার খরচ, পরিবারে চিকিৎসা ব্যয়, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার বহন করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষে পে-কমিশন গঠন, অন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য ৫০ শতাংশ মহার্ঘভাতা প্রদান করা অত্যন্ত জরুরি।
অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেছ আলী বলেন, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে চার দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। এর মধ্যে গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে কালো ব্যাচ ধারণ কর্মসূচি চলছে। যা আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টম্বর পর্যন্ত দাবি আদায়ের স্বপক্ষে জনসংযোগ। ১ অক্টোবর দেশের সকল জেলায় প্রেসক্লাব/ জনবহুল স্থানে দাবি আদায়ের লক্ষে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে সংশ্লিষ্ঠ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরারবর স্মারকলিপি প্রদান করব।
আগামী ১৫ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনশেষে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন (গণভবন) অভিমুখে স্মারকলিপি প্রদানের জন্য পদযাত্রা। এরপরও যদি এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে পরবর্তীকালে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
মঙ্গলবারের সভা থেকে কর্মচারী ঐক্য পরিষদ সাত দফা তুলে ধরেছে। এগুলো হচ্ছে, পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অর্ন্তবর্তীকালীন সময়ে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে কমিশন কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।
সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পদ ও পদবী পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি প্রণয়ন করতে হবে।
টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড, বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহাল এবং সকল স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে গ্রাচ্যুইটির পরিবর্তে পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্রাচ্যুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের স্থলে ১০০ ভাগ নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচ্যুইটি ১ টাকায় = ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারি শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ। আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে।
ব্লক পোস্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পরপর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। এবং বাজার মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
এনএইচবি/এমএমএ/