কোনো দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করবে না ইসি

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চাইলেও কোনো দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করতে পারে না এবং সে ধরনের কোনো প্রয়াস নির্বাচন কমিশন (ইসি) নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। ইসির সারসংক্ষেপে বলা হয়, নির্বাচনকালীন সরকারের ইস্যুটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়।
সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে গত মাসে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষে প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে সারসংক্ষেপ তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই সারসংক্ষেপে নিজেদের অবস্থান ও মতামত তুলে ধরেছে ইসি।
রাজনৈতিকদলগুলো নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ছিল সংলাপে। কোনো কোনো দল বলেছে বিদ্যমান সরকার ব্যবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আবার কোনো কোনো দল বিদ্যমান সরকার ব্যবস্থা রেখে কতিপয় মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিতে বলেছিল।
তাদের সেই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন বলেছে-নির্বাচনকালীন সরকারে জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে ইসির অধীনে ন্যস্ত করতে সংবিধানের আলোকে বিবেচনা করা প্রয়োজন। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সংবিধান ও আইনে দেওয়া ক্ষমতা, সততা ও সাহসিকতার সঙ্গে প্রয়োগ করার বিষয়ে আশ্বস্ত করে নির্বাচন কমিশন।
জুলাই মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে পাওয়া প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে ইসি জানিয়েছে, ইভিএম নিয়ে আরও বিচার-বিশ্লেষণ করে ‘ভিন্নভাবে’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সোমবার সারসংক্ষেপটি নিবন্ধিত ২৮টি দল, আইনমন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।
প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অসামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা অপ্রতুল হতে পারে। এ কারণে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবটি যৌক্তিক মনে করে ইসি।
নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে দলগুলোয় আপত্তি এবং সমর্থন দুটোই রয়েছে জানিয়ে বলা হয়, সার্বিক বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল স্বাক্ষরিত ‘ইসির সঙ্গে নিবন্ধিত দলগুলের সংলাপ থেকে প্রাপ্য মামত ও পরামর্শ এবং কমিশনের পর্যালোচনা ও মতামত’ শীর্ষক এ সারংক্ষেপে এসব বলা হয়।
এতে বলা হয়, মতামতগুলো কমিশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখেছে। রাজনীতিতে গণতন্ত্রের সুস্থ চর্চা প্রয়োজন...নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে অভিন্ন প্রত্যাশা পোষণ করে।
এসবের বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশন, সরকার, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং রাজনৈতিক দলসহ সবার ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন।
গণমাধ্যমে পাঠানো এ সারসংক্ষেপের বিষয়ে ইসির জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানান, ইসির নির্দেশনায় সংলাপে অংশ নেওয়া ৩৯টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে অংশ নেওয়া ২৮টি দলকে তা পাঠানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছেও ইসির পর্যালোচনা ও মতামত পাঠানো হয়েছে।
১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত এ সংলাপে ২৮টি দল অংশ নেয়। দুটি দলকে সেপ্টেম্বরে সংলাপে অংশ নেওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। ৯টি দল সংলাপে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থেকেছে।
এসএম/এমএমএ/
