বাংলাদেশ-সৌদি ভ্রাতৃত্ব সময়ের পরীক্ষিত বন্ধু: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরব বহু পুরনো ভ্রাতৃত্ব এবং সময়ের পরীক্ষিত বন্ধুত্ব উপভোগ করে। আমাদের সম্পর্ক গভীর বোঝাপড়া, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য অভিন্ন আকাঙ্খার উপর ভিত্তি করে যা আমাদের ইসলামি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ভিত্তি।
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫ বছর পূর্তি এবং মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই প্রেক্ষাপটে আমি জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে প্রয়াত বাদশাহ ফয়সাল বিন আবুদুল আজিজের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বৈঠকের কথা স্মরণ করি। আমার বলা উচিত এটি একটি অত্যন্ত সময়োপযোগী বৈঠক ছিল যা আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
সাম্প্রতিক দশকে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নিয়েছে এমন মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি-বাংলাদেশ সম্পর্কের পরিচয় ক্রমান্বয়ে রূপান্তরের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিকশিত হয়েছে একজন সাহায্য গ্রহীতা থেকে 'উন্নয়ন অংশীদার' হওয়া। সৌদি আরব এখন বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়নকারী আমাদের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগীদের একটি।
ড. মোমেন বলেন, আমি এটা জেনে খুশি যে সৌদি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি পরিবহনমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিনিয়োগ প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করেন। আমি সৌদি ব্যবসায়ীদের ইইজেড (এক্সক্লুসিভ ইকোনোমিক জোন) বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর ইজেড (ইকোনোমিক জোন), মিরসরাই এবং অন্যান্য লাভজনক অঞ্চলে ব্যবসাবান্ধব বিনিয়োগের সুযোগ অন্বেষণ করার জন্য অনুরোধ করব।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি সৌদি আরব একই ধরনের ভিশন ২০৩০ তৈরি করেছে। এই প্রেক্ষাপটে আমি আমাদের উভয়ের ভিশন বাস্তবায়নের জন্য একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করছি।
এই শুভ উপলক্ষে আমি উভয় দেশের নেতৃত্ব এবং জনগণকে আমার উষ্ণ অভিনন্দন জানাতে চাই উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশ-সৌদি সম্পর্ক আরও গভীর ও মাত্রায় বৃদ্ধি পাবে এবং আমাদের দুই জনগণের জন্য পারস্পরিক সুবিধার জন্য এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশের প্রতি সদয় সমর্থনের জন্য পবিত্র দুই মসজিদের কাস্টোডিয়ান মহামান্য বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং সৌদি আরবের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. এসা ইউসুফ এসা আলদুহাইলানসহ ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনাররা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরইউ/এএস
