সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশনা
অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোসহ বিমানের অভ্যন্তরীন সংকট এবং বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো প্রয়োজন। গুরুত্ত্বপূর্ণ নয় এমন অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প স্থগিত করা করকার। জ্বালানি সংকট দূর করতে গাড়ির ব্যবহারও কমানো দরকার।’
সোমবার (২৫ জুলাই) মন্ত্রিসভা বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন। অপরদিকে মন্ত্রিসভার সদস্যরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সভাকক্ষ থেকে বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সচিবালয়ে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিমানে দুর্ঘটনা অর্থাৎ দুইটা বিমান ধাক্কা লাগল। কিন্তু বিমান তো আর একা একা ধাক্কা লাগে না। এখানে অনেকে ডিউটি করে। এর জন্য একটা ওয়ার্কআউট করতে হবে। যারা যারা ওই সময়ে ওই কাজে নিয়োজিত থাকবেন সবাইকে এর জন্য দায়দায়িত্ব বহন করতে হবে।
কীভাবে তাদের কম্পেনসেট করবে সেটা ফাইন্ডআউট করে কুইকলি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বিমান ইস্যুতে আলোচনার সময় তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৈশ্বিক ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী আবারও পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছেন খরচ কমাতে হবে। এটার জন্য অলরেডি আমাদের প্রকল্পগুলো ক্যাটাগরি করে দেওয়া হয়েছে। এ, বি ও সি- এই ক্যাটাগরি করা হয়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরি হচ্ছে যেগুলো ইমিডিয়েটলি প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে কোনটা আগে করবে। ‘বি’ ক্যাটগরিতে ৭৫ শতাংশ টাকা খরচ করা যাবে। আর ‘সি’ ক্যাটাগরির প্রকল্প আপাতত স্থগিত থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ক্যাটাগরি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয়গুলো নির্ধারণ করবে তারা কোনোটা কোনো ক্যাটাগরিতে করবে হবে।
তিনি জানান, কেনাকাটার ক্ষেত্রেও কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, যেগুলো না কিনলে নয় সেগুলোই শুধু কেনা যাবে। গাড়ি কেনার বিষয়টি পরিষ্কার নিষেধ করে দিয়েছেন। যেগুলো ইমিডিয়েট দরকার নাই সেটা না কেনার নির্দেশ দিয়েছেন।
আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ট্রেজারি থেকে বিল হয়, এমন কোনো বিদেশ ভ্রমণ এখন মন্ত্রণালয়গুলো করতে পারবে না। সরকারি টাকায় সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ থাকবে।
দরপত্রে থাকা দরদাতার ব্যয়ে প্রযুক্তি স্থানান্তর সংক্রান্ত যে বিদেশ সফর রয়েছে, সেগুলো বন্ধ থাকবে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সবাইকে একটু সহযোগিতা করার জন্য উনি (প্রধানমন্ত্রী) বিশেষ অনুরোধ করেছেন। কারণ, এটার (ভবিষ্যৎ) আমরা জানি না। পরশু চুক্তি হল, কালকেই আবার ইউক্রেইনের ওদেসা বন্দরে বোমাবর্ষণ হয়েছে। চুক্তি হয়েছে ইউক্রেইন থেকে খাবারটা বেরিয়ে আসবে। বন্দর ছাড়া আসবে কীভাবে? এটা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে না। সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে জ্বালানি, খাবার ও সার নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, আমাদের বার বার অনুরোধ করা হয়েছে। যেভাবে হোক আমরা যেন সাশ্রয়ী হই। এনার্জি ও টাকা-পয়সা অহেতুক খরচ না করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এমন সংকট মোকাবিলায় শস্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য। বিশেষ করে কোথাও যদি এক ফসলি জমি থাকে, সেখানে তিন ফসল করার বিষয়টি চিন্তা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বাড়ির উঠানে শাকসবজি করারও পরামর্শ দেন।
এনএইচবি/এমএমএ/