২০২৬ সালের পরও ঢাকাকে সহযোগিতার আশ্বাস টোকিওর
২০২৬ সালে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাব উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পরও দ্রুত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাপানের অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে জাপান।
রবিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে জাপানের সংসদীয় ভাইস-মিনিস্টার হোন্ডা তারো সাক্ষাৎকালে এ আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাপানে ঐতিহাসিক সফরের কথা স্মরণ করেন, যা দুই দেশের মধ্যে আজকের অনুকরণীয় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিল। তিনি ২০১৪ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন, যখন দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ‘বিস্তৃত অংশীদারিত্ব’ পর্যায়ে উন্নীত করেছিল।
প্রতিমন্ত্রী ১৯৯৭, ২০১০, ২০১৪, ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপানে সফরের কথাও স্মরণ করেন যা দুই দেশের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে সুদৃঢ় করেছে।
জাপানের সংসদীয় উপমন্ত্রী বিদ্যমান অংশীদারিত্বে নতুন গভীরতা ও বিষয়বস্তু যোগ করার জাপানের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন এবং ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব’কে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে এ বছরের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের প্রত্যাশা করেন। তিনি এসময় ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের গ্রাজুয়েশনের পরও দ্রুত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাপানের অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দেন।
উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বাংলাদেশে জাপানি এফডিআই, পাশাপাশি পারস্পরিক সুবিধার জন্য জনগণের মধ্যে যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা করে। তারা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে বিশেষ করে এসডিজি, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, জাতিসংঘ সংস্কার ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। জাপানি উপমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণ কার্যক্রমে বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
হোন্ডা তারো রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং টেকসই প্রত্যাবাসনে জাপানের সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই রাজনৈতিক সমাধানে জাপানের সক্রিয় সমর্থন কামনা করেন।
বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় ভাইস-মিনিস্টার ২১-২৫ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করেন। সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় ভাইস-মিনিস্টার হোন্ডা তারোর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করেন, যেখানে অন্যদের মধ্যে জাইকার প্রেসিডেন্ট তানাকা আকিহিকো, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. পররাষ্ট্র বিষয়ক কাজী নাবিল আহমেদ, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, পররাষ্ট্র সচিব, বিডা-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান, ইআরডি সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
আরইউ/