সিলেটের প্রধান নদীগুলো ড্রেজিং করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর: হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দুর্যোগে আওয়ামী লীগই মানুষের পাশে থাকে। এটি আমাদের দলের একটি কালচার, একটা রীতি, কারণ রাজনীতি তো দেশ ও মানুষ সেবার জন্যই। আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম না তখনও আমরা মানুষের পাশে ছিলাম।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিলেটের প্রধান নদীগুলো ড্রেজিং করার নির্দেশনা দিয়েছেন। কারণ পলি জমার কারণে নদীর ক্যারিং ক্যাপাসিটি বা নাব্যতা কমে গেছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণায় বন্যাপ্লাবিত এলাকা পরিদর্শন শেষে বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মানবতার মা। তিনি ছুটে গেছেন, সেখানে ত্রাণ তৎপরতায় প্রশাসন ও আমাদের দলীয় নেতাদের উৎসাহ দিয়েছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন। স্বস্তির কথা হচ্ছে, আজকে সেখানে কোনো বৃষ্টি হয়নি। আগের তুলনায় বন্যা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় ৪-৫ ফুট পানি নেমে গেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, ১৬ তারিখে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পর সেদিন সকালেই প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। সিভিল প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে কাজে লাগিয়েছেন। একইসাথে আমাদের দলের নেতাকর্মীকে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য আদেশ দিয়েছেন। আজকে আমরা গিয়ে সরেজমিনে দেখলাম এবং স্থানীয়রা তাদের অভিব্যক্তিতে জানালেন যে, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে।’
‘সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি এবং আমাদের দলীয় নেতাকর্মী সবাই সম্মিলিতভাবে বন্যার্ত মানুষকে উদ্ধার করা, খাবার পৌঁছানোর কাজগুলো করেছে। সিলেটে আমাদের একজন নেতা জানিয়েছেন যে, তার নিচের তলা পানিতে ডুবে গেছে, দোতলায় নিজেরা উঠেছে এবং তিনতলায় সমস্ত মানুষকে আশ্রয় এবং খাবার দিচ্ছে। সেনাবাহিনীর জিওসি বলেছেন যে, বন্যার মধ্যে জায়গা চেনা যাচ্ছে না কারণ হাওড়ের মধ্যে কোথায় রাস্তা ছিলো সব মিলিয়ে গেছে, এমনকি দ্বীপ পর্যন্ত চিহ্নিত করা যায় না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এবং আমাদের নেতাকর্মীরা তাদেরকে গাইড করেছে। সুনামগঞ্জের ডিসি, এডিসি একটি নৌকা ঠেলে এক প্রসূতি মা, তার স্বামী আর একজন মহিলাকে ডিসির অফিসে এনেছেন। সেখানে সন্তানের জন্ম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার নাম রেখেছেন প্লাবন।’
বন্যা নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন মন্তব্য বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন সিলেটের মেয়রকে তার দলের কাছ থেকে কি পেয়েছে জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি কিছু বলতে পারলেন না। কারণ তার দল বিএনপির পক্ষ থেকে কিছুই করা হয় নাই, তাদের নেতাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকায় বসে বসে তারা লম্বা লম্বা বক্তব্য দেয়, বাকবাকুম করে, ওখানে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা জানেই না যে, সিলেট অঞ্চলের সব মন্ত্রী এবং এমপি তাদের এলাকায় গেছেন। শুধু করোনাক্রান্ত বলে পরিকল্পনামন্ত্রী ঢাকায় রয়েছেন।’
আর রিজভী সাহেবের ‘প্রধানমন্ত্রীর কারণে বন্যা’ এমন উদভ্রান্তের মতো বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তার ভাষায় আসামের চেরাপুঞ্জিতে ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং সিলেট অঞ্চলে ১০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের জন্যও প্রধানমন্ত্রী দায়ী। তার কথায় তো তাই দাঁড়ায়। সবকিছুতে সরকারকে দায়ী করার বাতিকের কারণে তারা আসলে কোথায় কি বলবে বুঝতে পারে না’- যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।
বন্যা দুর্যোগের মধ্যেও সাংবাদিক নামধারী কেউ কেউ অপসাংবাদিকতায় লিপ্ত উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিক নামধারী কেউ কেউ ঢাকায় বসে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ইউটিউবে নানা ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে। করোনার সময়, পদ্মা সেতুর ভিত্তিস্থাপন ও নির্মাণ কাজ শুরুর সময়েও এটি হয়েছে, এখনও হচ্ছে। বন্যাদুর্গত জনগণ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
তিনি মূলধারার গণমাধ্যমগুলো আগের মত এখনও এ ধরণের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার সোচ্চার থাকার জন্য অনুরোধ জানান।
এনএইচবি/