৯০ বছরে পা দিলেন বদরুদ্দীন উমর
দেশের রাজনীতি ও সংস্কৃতি জগতের এক মহিরুহ বদরুদ্দীন উমর। আজ সোমবার (২০ ডিসেম্বর) ৯০ বছরে পা দিয়েছেন দেশের অন্যতম প্রধান এ মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিক, ইতিহাসবেত্তা ও বুদ্ধিজীবী।
বদরুদ্দীন উমরের পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও বিশ্লেষণমূলক বিশাল রচনা সম্ভার এদেশের ইতিহাস, সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতিকে উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তার অধিকাংশ লেখার অনুপ্রেরণা সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কোনো বিষয়, যেখানে ওই সময়ের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকটের বাস্তবতা উঠে আসে।
আজ যেখানে একটি পুরস্কারের লোভে মানুষ নিজের চিন্তা-চেতনার সঙ্গে আপস করতে পিছ-পা হন না, সেখানে বদরুদ্দীন উমর পেয়েছিলেন ফিলিপস পুরস্কার, আদমজী পুরস্কার, বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার, এমনকি একুশে পদকও; তাও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
তিনি যেন সততা আর সাহসের এক দেয়াল! ওই সততা আর সাহসের কারণেই বদরুদ্দীন উমর সত্য কথাটা যেভাবে নির্দ্বিধায়, নির্ভয়ে এবং পরিষ্কারভাবে উচ্চারণ করতে পারেন, অনেকেই তার মতো করে পারেন না।
তিন খণ্ডে উমর রচিত পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি (১৯৭০, ১৯৭৬ ও ১৯৮১) বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস রচনায় পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত। তার বাবা আবুল হাশিম ভারতীয় উপমহাদেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন।
উমর ১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। উমর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন। দর্শন বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিপিই ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবনের শুরুতে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। বদরুদ্দীন উমর ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের যাত্রা শুরু হয় তার হাত ধরেই। ১৯৬৮ সালে পদত্যাগ করেন।
তিনি সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের। তিনি বাংলাদেশ লেখক শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি।
এসএ/