দুদক ও মানবাধিকার কমিশনে গণকমিশনের শ্বেতপত্র হস্তান্তর
`একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে গঠিত ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’ কর্তৃক প্রকাশিত শ্বেতপত্রের কপি দুর্নীতি দমন কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
‘বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’ সম্প্রতি ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে, যার পৃষ্ঠা সংখ্যা ২১০০-এর অধিক।
বুধবার (১১ মে) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ’র কাছে শ্বেতপত্র তুলে দেওয়া হয়। শ্বেতপত্রের কপি হস্তান্তর করেন গণকমিশনের চেয়ারপার্সন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, কমিশনের সচিবালয়ের সমন্বয়কারী কাজী মুকুল, সদস্য শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময় ও ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী। এসময় দুদক কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক, দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহাবুব খান উপস্থিত ছিলেন।
গণকমিশনের চেয়ারপার্সন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুদক চেয়ারম্যান শ্বেতপত্র ভালো করে পড়ে দুদকের আইনের মধ্যে যতটুকু করা সম্ভব ততটুকু করবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। দুদকের আইনের বাইরে কিছু থেকে থাকলে সেটা করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা যেমন সিআইডি কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তা প্রেরণ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবেন বলে জানিয়েছেন।’
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘মৌলবাদী সাম্প্রদায়িকতা কর্মকাণ্ডর ছবিসহ বিবরণ, ভুক্তভোগীদের জবানবন্দী এবং এসব ঘটনার স্থায়ী সমাধানের জন্য শ্বেতপত্রে আমরা বেশ কিছু সুপারিশ করেছি। এর মধ্যে বিশেষ করে যারা এসব ঘটনায় দায়ী তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ করেছি। আশা করছি, মৌলবাদী সাম্প্রদায়িকতার শিকড় উপড়ে ফেলতে এই শ্বেতপত্র অপরাধ দমন সংশ্লিষ্ট বিশেষ করে ‘দুদক’কে সহযোগিতা করবে।’
গণকমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, ‘গণকমিশনের এই শ্বেতপত্রে ১০০০ মাদ্রাসা ও ১১৬ জন ওয়াজকারীর ওপর তদন্ত করে তথ্য-উপাত্ত যুক্ত করেছি। আশা করছি, আমাদের তদন্তের ওপর ভিত্তি করে দুদক তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবে।’
গণকমিশনের সচিবালয়ের সমন্বয়কারী কাজী মুকুল বলেন, ‘গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি হেফাজতে ইসলামের ৫০ জন নেতার আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে দুদক তদন্ত করছে। আমাদের শ্বেতপত্রে তাদের জঙ্গি সম্পৃক্ততা, সন্ত্রাস, হত্যা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি আর্থিক দুর্নীতি ও অরাজকতার তথ্য রয়েছে। আমাদের শ্বেতপত্র দুদকের তদন্তে সহায়ক হবে বলে আমরা মনে করি। আশা করব দুদক দ্রুত জামায়াত-হেফাজতের নেতৃবৃন্দ সহ অন্যান্য ওয়াজ ব্যবসায়ীদের আর্থিক দুর্নীতির বিবরণ জাতির সামনে তুলে ধরবে।
এরপর গণকমিশনের প্রতিনিধিদল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে যান। গণকমিশনের নেতারা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের কাছে শ্বেতপত্র তুলে দেন। এসময় ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ শ্বেতপত্র পড়ে মানবাধিকার কমিশনের আওতার মধ্যে যতটুকু সম্ভব উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
এপি/